প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩০, ২০২১, ০২:২৭ এএম
নতুন নির্বাচন (ইসি) কমিশন গঠনের লক্ষ্যে পরামর্শ ও আলোচনা করতে দেশের সব
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। ইতিমধ্যেই
বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। সংলাপও করেছেন কয়েকটির
দলের সঙ্গে। পর্যায়ক্রমে আমন্ত্রণের তালিকায় আরও দল রয়েছে। এরমধ্যেই বিএনপি জানিয়ে
দিল, তারা রাষ্ট্রপতির চলমান
সংলাপে যাবে না।
বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। এর আগে
সোমবার রাত ৮টায় অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এই সিদ্ধান্ত
চূড়ান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সভায় অংশ নেন- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন,
ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন
সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
সভায় নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতি সঙ্গে নিবন্ধণকৃত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের
সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বিএনপি মনে করে, বাংলাদেশের
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং নিরপেক্ষ
প্রশাসনের সাংবিধানিক নিশ্চয়তা ব্যতীত নির্বাচন কমিশনের গঠন নিয়ে সংলাপ শুধু সময়ের
অপচয়।
সভায় নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতি সঙ্গে নিবন্ধণকৃত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের
সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সভার সিদ্ধান্ত জানাতে বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল
ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিগত দুইটি নির্বাচন কমিশন গঠনের পূর্বে
রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে নিবন্ধণকৃত রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নিয়ে তাদের মতামত দিয়েছিল।
বিএনপি নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে সুস্পষ্ট প্রস্তাব লিখিতভাবে
রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করেছিল। কিন্তু সব উদ্যোগই ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচনকালীন সময়ে
আওয়ামী লীগের দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণে। রাষ্ট্র যন্ত্রকে বেআইনি ব্যবহার,
নির্বাচন কমিশনের চরম
ব্যর্থতা, অযোগ্যতার কারণে
নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদান প্রায় বন্ধ
করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের দলীয় সংগঠনে পরিণত হয়েছে। গণতন্ত্রকে
প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পর পর দুটি নির্বাচন কমিশনই চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১২ সালে সংবিধান পরিবর্তন করে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিধান বলবৎ করে প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্র বিকাশের সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে। জনগণ তার ভোটের অধিকার হারিয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দলীয় সরকার বহাল রেখে নির্বাচন কমিশন কখনই স্বাধীনভাবে নিরপেক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারবে না। বিএনপি বিশ্বাস করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ব্যতিরেকে সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কোনো নির্বাচন কমিশনই করতে পারবে না। রাষ্ট্রপতি নিজেই বলেছেন তার কোনো ক্ষমতা নেই পরিবর্তন করার। সেই কারণে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ কোনো ইতিতবাচক ফলাফল আনতে পারবে না। বিএনপি অর্থহীন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করবে না।
অর্ণব