প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০২১, ১১:৩৩ পিএম
মহান
মুক্তিযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল বলে মন্তব্য
করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আজ মানবাধিকার নিয়ে কথা বলছে। আমরা তাদের দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি
নিয়ে আগে পর্যবেক্ষণের অনুরোধ করছি।’
রোববার (১২
ডিসেম্বর) সকালে সচিবালয়ে তার দফতরে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের
বলেন, “একাত্তরের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ এবং ’৭৫-এর বঙ্গবন্ধু
হত্যাকাণ্ড নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন ঝুলে আছে। বাংলাদেশে
খাদ্য সংকটের সময় ১৯৭৪ সালে কিউবার কাছে পাট বিক্রির অজুহাতে খাদ্যবাহী জাহাজ
মাঝপথ থেকে ফিরিয়ে নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবুও বন্ধুত্বের প্রশ্নে স্পর্শকাতর এ
বিষয়গুলোকে বাধা হয়ে দাঁড়াতে দিইনি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের
বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। দ্বিপক্ষীয় এবং অভিন্ন ইস্যুসহ বহুপক্ষীয় ইস্যুতে দুই দেশ নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করছে।”
মানবাধিকার
লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ
করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ঘটনায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে
সরকার।
সেতুমন্ত্রী
বলেন, ‘কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু গোটা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছে,
যা
নিয়ে মার্কিন প্রশাসনকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে। সেখানে দৃশ্যমান বর্ণবাদ বিরাজ
করছে বলে অনেকেই মত প্রকাশ করেছিলেন। যাদের দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে
সাধারণ মানুষ দিনের পর দিন বিভিন্ন সিটিতে রাস্তায় নামে, তাদের অন্য দেশের
মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কোনো ধরনের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র
ও মানবাধিকার রক্ষার সূচকগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বলতার কথা অ্যামনেস্টি
ইন্টারন্যাশনাল বারবার উল্লেখ করেছে। এ জন্য খোদ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের
প্রতিনিধিকে যুক্তরাষ্ট্র সফরে বাধা দেয়া হয়।’
কৃষ্ণাঙ্গদের
প্রতি বৈষম্য এবং নিপীড়ন প্রশ্নে খোদ জাতিসংঘের উদ্বেগ প্রকাশিত হয়েছে জানিয়ে তিনি
প্রশ্ন করে বলেন, ‘মেক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে কতজন মারা
গেছেন? যেখানে বন্দুক
হামলায় প্রতি বছর লাখো মানুষ মারা যায়, নির্বাচনে হেরে যেদেশের ক্যাপিটাল হিল
দখল করতে গিয়ে পাঁচজনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। বিশ্ববাসী দেখেছে মার্কিন গণতন্ত্রের স্বরূপ ও
তাদের মানবাধিকারের চেহারা।’
বঙ্গবন্ধুর কোনো
কোনো খুনি এখনও যুক্তরাষ্ট্রে লুকিয়ে আছে, যুদ্ধাপরাধীরাও
সেদেশে পালিয়ে আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের
সাবেক সিনেটর অব লেবার রবার্ট রেইচ এক টুইট বার্তায় বিশ্বকে জানিয়েছিলেন শুধু ২০২০
সালে সেদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ৯৮৪টি।’
২০১৫ সালের পর
থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে
৬ হাজার ৬০০ জন। প্রতি বছর সেখানে প্রায় ১
হাজার মানুষ বিনা বিচারে মারা যান, যা বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যায় বলে
জানান ওবায়দুল কাদের।
এস/এম. জামান