প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২১, ০৮:২৬ পিএম
বিএনপি
মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘কুমিল্লার ঘটনা
সরকারি একটি মহলের ইঙ্গিতে হয়েছে, যা দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করেছে।’ রোববার (১৭
অক্টোবর) রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব
কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে কুমিল্লাসহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপে সরকারের মদদে হামলা হয়েছে। পুলিশ যদি ব্যবস্থা নিত তাহলে একটি ঘটনাও ঘটত না। জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সব সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখেছে। আমরা যখন ক্ষমতায় ছিলাম, তখন এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ সরকার আসার পর থেকে তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য সব সময় বিভিন্ন রকমের সমস্যা তৈরি করছে। কুমিল্লার ঘটনা সরকারি একটি মহলের ইঙ্গিতে হয়েছে, যা দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করেছে। সরকার এ সঙ্কট থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে সরিয়ে নিতে চেষ্টা করছে। যা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়।‘
তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরঞ্জিত শক্তি প্রয়োগের কারণে জীবনহানি ও গুরুতর আহতসহ দেশের বিভিন্ন জনপদ রক্তরঞ্জিত হচ্ছে। কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নোয়াখালী জেলাধীন বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনীতে শুক্রবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হামলা-ভাঙচুরসহ ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় যতন সাহা নামে একজন ব্যক্তি গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কুমিল্লার পূজামণ্ডপের ঘটনার জের ধরে চাঁদপুরের হজিগঞ্জ, নোয়াখালীর চৌমুহনী, ঢাকা মহানগর, চট্টগ্রাম, সিলেট, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল, মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, হামলার চেষ্টাসহ নানাবিধ সংঘাত-সংঘর্ষ ও পুলিশি আক্রমণে বিক্ষুব্ধ মানুষের ওপর লাঠিপেটা, গুলি, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ এবং বর্বরোচিত আক্রমণে হতাহতের ঘটনা শুধু নির্দয় আচরণই নয়, এটি কাপুরুষোচিত।’
তিনি বলেন, ‘এই অরাজকতা সৃষ্টিকারীরা বাংলাদেশের হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুমহান ঐতিহ্যকে ম্লান করল।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়েছে, তাদের উপাসনালয় ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। ২০০৯ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে কক্সবাজারের রামু-উখিয়া, পাবনা, টাঙ্গাইল, বি-বাড়িয়া, ফরিদপুর, নেত্রকোনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপাসনালয়ে আক্রমণ ও লুটপাট চালানো হয়েছে। তাদের ঘরবাড়ি, সহায়-সম্পত্তি আত্মসাৎ করা হয়েছে। এই দুষ্কৃতকারীরা প্রায় সবাই ক্ষমতাসীন দলের লোক।
তিনি বলেন, ‘কুমিল্লার সাধারণ মানুষের মতো আমরাও একমত যে, পুলিশ বাহিনী দ্রুত ব্যবস্থা নিলে নানুয়া দীঘির পাড়ের মণ্ডপের ঘটনাটি নির্মম অমানবিকতার দিকে গড়াত না।
অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের নীতি আওয়ামী লীগের ইতিহাস ও ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
জেডআই/এম. জামান