প্রকাশিত: অক্টোবর ১০, ২০২১, ০৭:২৫ পিএম
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, রোহিঙ্গাদের
সাহায্য করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর অবদান আছে। তাই শেখ হাসিনার নোবেল পুরস্কার না
পাওয়া দুঃখজনক। রোববার (১০ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে
এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
‘নাগরিকদের ভোটাধিকার ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশন কোন পথে’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও গণসংহতি আন্দোলন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের সাহায্য করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর অবদান আছে। জাতিসংঘের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। এ চুক্তি তো আরও ১৫ দিন আগেই হতে পারত। হয়নি ভারতের চক্রান্তে। বাংলাদেশের কিছু আমলা আছে, জনগণের টাকায় চলে, কিন্তু কাজ করে ভারতের হুকুমে। বিদেশি গোয়েন্দা বাহিনীর তৎপরতা ক্রমে বাংলাদেশে সক্রিয় হয়ে উঠছে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বলেন, প্রধানমন্ত্রী হেলসিঙ্কি গেলেন, যদি অসলো পর্যন্ত যেতেন, তাহলে হয়তো নোবেল পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যেত। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য তার নাম নোবেল পুরস্কারের শর্ট লিস্টে থাকলেও দেশে আইনের শাসন না থাকার জন্য প্রশ্ন উঠতে পারে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ২০ লাখ মামলা বিচারের অপেক্ষায় পড়ে আছে। খালেদা জিয়ার জামিন হয় না আমাদের বিচার প্রক্রিয়ায়। যে টাকা চুরি হয় নাই তার জন্য খালেদা জিয়া আটক আছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি প্রশ্ন উঠতে পারত, এই যে জাতিসংঘের অধিবেশনে ঘুরে যাচ্ছেন, এ টাকার অপচয় কোথা থেকে হচ্ছে?
তিনি বলেন, জনগণ দেশের মালিক হয়েও অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমরা খেতে পাই না, জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। যিনি রিকশা চালান তিনি রিকশাটারও মালিক হতে পারেন না। আমরা এক কোটি পরিবারকে ২৫ টাকা সেরে চাল দিতে পারি না, ১৫ টাকা সেরে আটা দিতে পারি না, ৫০ টাকায় তেল দিতে পারি না, চিনি দিতে পারি না।
প্রবীণ এই চিকিৎসক বলেন, আমাদের পক্ষে কথা বলার কেউ নেই। আমি এমপি হলেও আমার কিচ্ছু করার ক্ষমতা নাই। কনক সারোয়ারের বোন রাকাকে কেন ধরা হয়েছে? ভাই আপনার মন মতো কথা বলেননি, এজন্য তার বোনকে আপনি ধরতে পারেন? বাংলাদেশ একটি মাফিয়া রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। যে স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম তা বাস্তবায়নের জন্য রাস্তায় নামা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
আলোচনায় নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক সমঝোতায় আসার জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতি আহ্বান জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, রক্তপাত এড়িয়ে, অরাজনৈতিক প্রক্রিয়া এড়িয়ে কোনো সমাধানে পৌঁছাতে প্রয়োজন গণতান্ত্রিক উত্তরণে রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছানো। না হলে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের বাধ্য করতে হবে, নতুন রিপাবলিক (প্রজাতন্ত্র) তৈরির পথে অগ্রসর হতে হবে। আইন করে নির্বাচন কমিশন সংস্কার করা যাবে না। কেননা এ সরকারের তৈরি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আমরা দেখেছি। জনগণের স্বার্থের পক্ষের কোনো আইন তৈরির ক্ষমতা এই সরকারের নেই। এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন আইন চাই না।
তিনি বলেন, প্রথম বিষয় হলো, বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। ভোটাধিকারকে একটি স্থায়ী অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটিই এখন এক দফার লড়াই। এর জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। দ্বিতীয়ত, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার জন্য সাংবিধানিক পদগুলোতে নিয়োগের জন্য স্বাধীন কমিশন গঠন করতে হবে। তৃতীয়ত, সংসদে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নইম জাহাঙ্গীর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সদস্য হাসনাত কাইয়ুম, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী (ভারপ্রাপ্ত) আবুল হাসান রুবেল ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান প্রমুখ।
জেডআই/ডাকুয়া