প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২১, ১২:২৩ পিএম
জাপা নেতা জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর
প্রয়াণে শূন্য হয়েছে জাতীয় পার্টির মহাসচিবের পদ। শনিবার (২ অক্টোবর) করোনা
আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন মারা যান এই নেতা। এর মধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে- কে হচ্ছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব।
দলের
ঘনিষ্ঠসূত্রে জানা গেছে, দলের মহাসচিব বাবলুর মৃত্যুতে
মহাসচিবের দৌড়ে এগিয়ে আছেন সাবেক মন্ত্রী এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার। জিএম কাদেরের
নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির নতুন মহাসচিবের দায়িত্ব নিয়ে দলের হাল ধরতে পারেন তিনি।
বর্তমানে হাওলাদার পবিত্র ওমরাহ পালন করতে সৌদি আরবে রয়েছেন। ইতোমধ্যে তিনি ওমরাহ
শেষ করেছেন। বাবলুর মৃত্যুর খবরে দু-একদিনের মধ্যে দ্রুত দেশে ফিরছেন তিনি।
প্রয়াত
রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কমিটিতে দীর্ঘ সময় ধরে একাধিকবার মহাসচিবের
দায়িত্ব পালন করে আস্থাভাজন ও পরীক্ষিত নেতায় পরিণত হন তিনি। প্রয়াত এরশাদের সময়
থেকে এখন পর্যন্ত দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে কর্মীবান্ধব নেতা হিসেবে তিনিই
জনপ্রিয়তার শীর্ষে। বর্তমানে তিনি দলের কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
নাম প্রকাশে
অনিচ্ছুক দলের এক প্রভাবশালী প্রেসিডিয়াম সদস্য জানান, দলের মহাসচিব
হিসেবে নেতাকর্মীদের প্রথম পছন্দ এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদারকে। তাকে নেতাকর্মীরা
দলের মহাসচিব হিসেবে চান। দলের কো-চেয়ারম্যান হলেও আগের মতোই তিনি সারা দেশের
নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন। করোনা মহামারিতে নেতাকর্মীদের
নিয়মিত খোঁজখবর নিয়েছেন তিনি।
দক্ষ সাংগঠনিক ব্যক্তি
হিসেবে প্রয়াত এরশাদের যেমন পছন্দের পাত্র ছিলেন, তেমনি পার্টির
বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদেরও তাকে পছন্দ করেন। প্রয়াত মহাসচিব বাবলুর জায়গায়
তাকে দায়িত্ব দিলে জাতীয় পার্টি আবার ঘুরে দাঁড়াবে।
জানা গেছে,
মহাসচিব হিসেবে আলোচনায় আছেন দলের শীর্ষ পর্যায়ের আরও চার নেতা। তারা হলেন— দলের
সাবেক মহাসচিব ও প্রেসিডিয়াম সদস্য মশিউর রহমান রাঙ্গা, সাবেক
প্রতিমন্ত্রী ও দলের কো-চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান
সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এবং খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করে চমক
দেখানো দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইদুর রহমান টেপা।
দলের মহাসচিব
হিসেবে এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার দায়িত্ব না নিলে সেক্ষেত্রে মশিউর রহমান
রাঙ্গাসহ এই পাঁচ নেতার মধ্য থেকে যে কাউকে দলের মহাসচিব করা হতে পারে। তবে
সব কিছু নির্ভর করছে দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের ওপর। তিনি যার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন তাকেই মহাসচিব করবেন। তবে তিনি তাদের মধ্য থেকে এমন কাউকে
মহাসচিব হিসেবে বেছে নেবেন যিনি তার প্রতি আস্থাভাজন। অবিচল থাকবেন এমন নেতাকে
মহাসচিবের দায়িত্ব দেবেন বলে জানা গেছে।
জাতীয় পার্টির
গঠনতন্ত্রের ২০/১ (১) ক উপ-ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে একমাত্র চেয়ারম্যানই একচ্ছত্র
ক্ষমতাবলে দলের মহাসচিব নিয়োগ দেবেন। তিনি চাইলে যে কোনো সময় যে কাউকে বাদ দিতে
পারেন।
দলের মহাসচিব কে
হচ্ছেন জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব সাইদুর
রহমান টেপা বলেন, এখনই এসব নিয়ে ভাবার সময় নয়। আমরা আমদের প্রিয়
মহাসচিব বাবলু ভাইকে হারিয়েছি। আমরা শোকাহত। আল্লাহপাক তাকে যেন জান্নাতবাসী
করেন।
তিনি বলেন,
পার্টির
চেয়ারম্যান এ বিষয়ে অত্যন্ত বিজ্ঞ। কাকে মহাসচিব করলে দলের জন্য ভালো হবে
তিনিই ভালো জানেন। আশা করি, নেতাকর্মীদের জন্য ভালো, সবার
গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকেই তিনি মহাসচিবের দায়িত্ব দেবেন।
হুসেইন মুহম্মদ
এরশাদ মারা যাওয়ার পর ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর জাতীয় পার্টির নবম কাউন্সিলে মশিউর
রহমান রাঙ্গাকে মহাসচিব করা হয়। বেশ কিছুদিন পর মশিউর রহমান রাঙ্গাকে মহাসচিবের পদ থেকে সরিয়ে তার জায়গায় জিয়াউদ্দিন আহমেদ
বাবলুকে নতুন মহাসচিব করেন জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
জানা গেছে,
দলের
মহাসচিব বাবলুর মৃত্যুর পর মহাসচিব হওয়ার জন্য বেশ কিছু নেতা দৌড়ঝাপ শুরু
করছেন। তবে দলের তরুণ নেতাদের মধ্য থেকেও দলের মহাসচিব করার দাবি রয়েছে নেতাকর্মীদের।
এক্ষেত্রে দলের মহাসচিব প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সল চিশতী, লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি, রেজাউল
ইসলাম ভুইয়া ও ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি। তরুণ এসব নেতাদের মধ্য থেকে
কাউকে মহাসচিবের দায়িত্ব দেওয়া হলে দলের জন্য ভালো হবে বলেও মনে করেন মাঠ
পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
এস/ডাকুয়া