• ঢাকা শুক্রবার
    ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১

খালেদা জিয়ার বিদেশ চিকিৎসা : সুযোগ এখনো আছে, তবে...

প্রকাশিত: মে ১১, ২০২১, ০৬:১২ পিএম

খালেদা জিয়ার বিদেশ চিকিৎসা : সুযোগ এখনো আছে, তবে...

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার পথ এখনো খোলা রয়েছে। কী কী বিকল্প পথ খোলা রয়েছে, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর আলোচনা চলছে। বিএনপির হাইকমান্ড বেগম জিয়ার পরিবার তার উন্নত চিকিৎসার বিকল্প উপায়গুলো খুঁজছেন, তা নিয়ে বিশ্লেষণও করছেন।

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি খালেদা জিয়াকে তার পরিবার বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য যে আবেদন করেছিল, সরকার তা নাকচ করে দেয়। সরকার বলছে, খালেদা জিয়া দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় আইনে তার বিদেশ যাওয়ার সুযোগ নেই। অন্যদিকে বিএনপির অভিযোগ, আইনের অপব্যাখ্যা দিয়ে সরকার খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করেছে।

এমন আলোচনার মধ্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার পথ এখনো খোলা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি বরাবর ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি মুক্তি পেতে পারেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া প্রথমবার যখন মুক্তি চেয়ে দরখাস্ত দিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী তখন ৪০১ ধারা বলে তাকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিলেন। খালেদা জিয়া ওই সময় সব শর্ত মেনেই মুক্তি পেয়েছেন। সেই সময় ওই দরখাস্ত নিষ্পত্তি হয়ে গেছে।

আনিসুল হক বলেন, ‘একটি দরখাস্ত নিষ্পত্তি হওয়ার পর আবারও সেটা পুনর্বিবেচনা করার এখতিয়ার আইনে কোথাও বলা নেই। তাই যে দরখাস্ত নিষ্পত্তি হয়ে গেছে, সেটা আর পুনর্বিবেচনার সুযোগ নেই।

তবে খালেদা জিয়া যদি তার বিরুদ্ধে আনীত সমস্ত অপরাধ স্বীকার করে আবারও প্রধানমন্ত্রী অথবা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং তারা যদি ক্ষমার বিষয়টি বিবেচনা করে তাকে মুক্তি দেন তাহলে তিনি বিদেশ অথবা যেকোনো জায়গায় যেতে পারেন, বলেন আইনমন্ত্রী।

আনিসুল হক বলেন, ‘সরকার যদি কোনো পদক্ষেপ নেয় তবে তা আইনের মাধ্যমে নিতে হয়। আইনে বলা আছে, প্রধানমন্ত্রী চাইলে যেকোনো দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে শর্তসাপেক্ষে অথবা নিঃশর্তভাবে ৪০১ ধারা বলে মুক্তি দিতে পারেন। ৪০২ ধারার মাধ্যমে রাষ্ট্রপতিও এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন। ছাড়া রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৪৯ নম্বর আর্টিকেলের মাধ্যমে নিজ ক্ষমতাবলে যেকোনো দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করতে পারেন।

দিকে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশযাত্রার অনুমতি না দেয়ায় পরিবারের পাশাপাশি উদ্বিগ্ন দলের নেতাকর্মীরা। হতাশ ক্ষুব্ধ হয়েছেন মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীরা। খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি না দেয়ার বিষয়ে যতটা আইনি দিক রয়েছে, তার চেয়ে বেশি রাজনীতি রয়েছে।

বিএনপি নেতারা মনে করেন, খালেদা জিয়াকেভিত্তিহীনমামলায় সাজা দিয়ে কারাবন্দি করার অর্থ হচ্ছে- তাকে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরিয়ে দেয়া। যে ষড়যন্ত্র ওয়ান-ইলেভেনের সময় থেকে হয়ে আসছে।

আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েও অনেকে দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা নিয়েছেন। এমন নজিরও রয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কেউ কেউ মন্ত্রী হয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। আইনে সুযোগ আছে, কিন্তু আইনের অপব্যাখ্যা দিয়ে শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেয়া হয়নি, মন্তব্য বিএনপি মহাসচিবের।

আইএম/সিআর/এম. জামান

রাজনীতি সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ