• ঢাকা রবিবার
    ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

সরকার পতনের নামে ষড়যন্ত্রের আন্দোলন

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২২, ১১:০৫ পিএম

সরকার পতনের নামে ষড়যন্ত্রের আন্দোলন

মু আ কুদ্দুস

ষড়যন্ত্র নাকি সরকার হটানোর আন্দোলন বিএনপির। আর এই নিয়ে আওয়মী লীগ-বিএনপি এখন মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। পাল্টা-পাল্টি কথা চালাচালি হচ্ছে। এতে ভিতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ছেন দেশের সাধারণ মানুষ। সবাই ভাবছেন, না জানি কি হয়? আর বি এনপি যা বলছে সেটাও সাধারণ মানুষের কাছে গুরুত্ব পাচ্ছে না। কারণ তারা ইতিপূর্বে অনেক কর্মসূচি দিয়ে ব্যর্থ হতে দেখেছে। এ নিয়ে ২৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশে এখন চক্রান্ত ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে সরকার হটানোর। এ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের প্রস্তুত হতে হবে, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো শক্তি নেই তাকে পরাজিত করার। ‘নোয়াখালীর কবীরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। অপর দিকে, এক দফার আন্দোলন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার এক বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বলেন, এখনও আসল ঘোষণা দেইনি, আসল ঘোষণা আসবে ১০ ডিসেম্বর। আর সেদিন থেকেই শুরু হবে এক দফার আন্দোলন। সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর নাকি সমাবেশ করতে দেয়া হবে না। ১০ তারিখ নয়াপল্টনেই সমাবেশ হবে। এটা জনগণের ঘোষণা। তিনি এটাও বলেছেন, সেদিন শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবো।

দেশের বড় রাজনৈতিক দু’দলের এমন পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে সাধারণ মানুষ কিংকর্ত্ব্যবিমূঢ়।  এমনিতেই গত দুই বছরে করোনা দেশের উন্নয়নে অনেক বাঁধার কারণ ছিল। সবার দিন কেটেছে লক ডাউনে। তারপরও দেশ সচল ছিল। বর্তমান সরকার মহাসংকটের মধ্যেও রুটিন মাফিক কাজগুলো সচল রেখেছিল। ২০২২ সালে সেই সব উন্নয়ন দৃশ্যমান হয়েছে। আমরা পেয়েছি, পদ্মা সেতু, পায়রা সেতুসহ আরও শতাধিক সেতু। উদ্বোধনের অপেক্ষায় মেট্রোরেল, ঢাকা-কক্সবাজার রেল যোগাযোগসহ সড়ক মহাসড়কে বর্ধিত করন কাজের।

১০ ডিসেম্বর কী এমন হবে? কী করতে পারবে বিএনপি, এমন প্রশ্ন সবার মধ্যে। আসলে কী সে দিন কিছু একটা হবে? তাহলে কেন এত বাকবিতণ্ডা? এমন অস্থিরতা । আর এই উত্তেজনার কারণে সাধারণ মানুষ সংকটে পড়বে। অসাধু ব্যবসায়ীরা সুযোগ কাজে লাগিয়ে মুনাফা লুটবে। আর এমন সুযোগগুলো আসছে ১০ ডিসেম্বরের ঘোষণার প্রেক্ষিতে। নেতা-নেত্রীদের বক্তব্যের কারণে। অন্যদিকে অনেকেই গণ্ডগোলের আশংকা করছেন। এতে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের সাধারণ মানুষ। তবে সরকার হটানোর আন্দোলন সফল হবে কি না সেটা নিশ্চিত করে  বলা যায় না। শান্তিপ্রিয় মানুষ আন্দোলন চায় না। শান্তি চায়। মানুষ এক মুঠো ভাত আর মোটা কাপড় নিয়ে বাঁচতে চায়।

বিএনপি ঘোষণা দিয়েছে ‘আমরা ১০ ডিসেম্বরের পর নেমে পড়বো। আর বসে থাকার সুযোগ নেই‘। সরকার বলছে, দেশে কোনো অরাজকতা হতে দেবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থায় থাকবে। আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরাও প্রস্তুত থাকবে। কোনো ধরনের নাশকতা হলে তা শক্তভাবে প্রতিহত করা হবে।

বিএনপি সরকার হটানোর আন্দোলন করবে এটা নতুন কথা নয়, বহুবার বলেছে। কিন্তু তাদের দুর্বল নেতৃত্বের কারণে সেটি আর হয়নি। বারবার পিছুটান দিতে হয়েছে। সেই আলোকেই বলা যায়, এবারের ঘোষণাও কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পারবে? মানুষ আন্দোলন চায় না। মানুষ শান্তি চায়। নিরাপদে থাকতে চায়। বর্তমান সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করে সাধারণ মানুষ বলছেন, আমরা অনেক কিছু পেয়েছি। পেয়েছি ঘর, খাবার, বস্ত্র, অর্থসহ নিরাপদে থাকার নিশ্চয়তা। প্রতিটি দুর্যোগে সরকার পাশে দাঁড়িয়েছে। কাজেই এ সরকারকে হটিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র সফল হবে না। পরিশেষে, দেশবাসীর সঙ্গে আমরাও তাকিয়ে আছি- এটা কি বিএনপির ষড়যন্ত্র নাকি সরকার হটানোর আন্দোলন।

 কিউ/এএল/সাজেদ

আর্কাইভ