প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২২, ১২:১৫ এএম
লিবিয়ার স্বৈর শাসক ছিলেন কর্নেল মুয়াম্মের আল গাদ্দাফি। তার আমল ছিল নাগরিকদের জন্য স্বর্ণযুগ। এ কথা বললে কেউ আজ তা বিশ্বাস করবেন না। তারপরও ইতিহাস চলে তার নিজের গতিতে। তিনি কে ছিলেন তা আমেরিকানরা জানতেন। তাকে হত্যার পর নাগরিকদের উন্মেষ ঘটবে সেটাও তারা জানতো।
এই কারণে জীবিত গাদ্দাফির চেয়ে মৃত গাদ্দাফিতে তারা বেশি ভয় করতেন। তাই গাদ্দাফির মরদেহ তারা ফেরত দেননি। তাকে কোথায় সমাহিত করা হয়েছে তাও বলা হয়নি।
স্বৈর শাসকরা যত ভলো কাজই করুক না কেন, তাদের পক্ষ নেব না। তবে যা সত্য তা বলতেই হয়। গাদ্দাফি স্বৈরশাসক ছিলেন এ কথা সত্য। তিনি স্বৈরাচারী হলেও নাগরিকদের যেসব সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন তা লিবিয়ানদের জন্য আজ অনুশোচনার উপাদান।
১৯৬৯ থেকে শুরু করে তিনি ২০১১ সন পর্যন্ত তিনি ছিলেন লিবিয়ার একনায়ক শাসক। গাদ্দাফি ক্ষমতা নেয়ার আগে সে দেশে শিক্ষার হার ছিল ২৫ শতাংশ। সেটাকে তিনি বাড়িয়ে ৮৩ শতাংশে উন্নীত করেছিলেন।
তার ৪২ বছরের শাসনামল লিবিয়ার নাগরিকদের জন্য ছিল স্বর্ণযুগ। তার আমলে যেসব সুবিধা ছিল তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-
১। কোনো নাগরিকের কাছ থেকে বিদ্যুতের বিল নেয়া হতো না।
২। রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে সুদ নেয়া হতো না।
৩। বিয়ের পর প্রত্যেক দম্পতিকে বাড়ি কেনার জন্য ৫০ হাজার ডলার দেয়া হতো।
৪। বিনা মূল্যে শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা দেয়া হতো।
৫। কৃষি খামার করতে আগ্রহীদের জন্য বিনা মূল্যে ভূমি বীজসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ দেয়া হতো।
৬। নিজ দেশে শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা না গেলে তাকে বিদেশ পাঠানোসহ সকল ব্যয় সরকার বহন করতো।
৭। তেল বিক্রির একটা অংশ প্রত্যেক নাগরিকের ব্যাংক হিসাব নম্বরে সরাসরি জমা হতো।
৮। সন্তান জন্ম দেয়ার পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেক মাকে পাঁচ হাজার ডলার উপহার দেয়া হতো।
তিনি ঘোষণা করেছিলেন, নাগরিকদের আবাসনের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত তার মা-বাবার জন্য কোনো বাড়ি বরাদ্দ করা হবে না। এত কিছুর পরও সে দেশের মানুষ কর্নেল গাদ্দাফিকে সহযোগীতা না করে বিদেশি প্রভুদের খুশি করেছে। তারা গাদ্দাফিকে ধরে ন্যাটো বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে। সেই জাতি এখন তাদের ভুলের খেশারত কিভাবে দিচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
--আব্দুল বারী, সিটি নিউজ ঢাকা