• ঢাকা শনিবার
    ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শক্ত প্রাচীরে হারিয়ে যাওয়া এক কোমল কিশোর প্রাণ!

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২২, ০৯:০২ পিএম

শক্ত প্রাচীরে হারিয়ে যাওয়া এক কোমল কিশোর প্রাণ!

ইফতেখায়রুল ইসলাম

কোথাও কোনো ঘটনা সংঘটিত হলে স্বাভাবিকভাবেই পুলিশকে প্লেস অব অকারেন্স তথা ঘটনাস্থলে যেতে হয়! ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন মানিকদী এলাকায় এক কিশোরের আত্মহত্যাজনিত মৃত্যুর বিষয় যাচাই করতে গিয়েছিলাম আজ।

বাসার সন্নিকটে যেয়ে যখনই ঢুকতে যাবো তখনই সামনে দেয়ালঘেরা প্রাচীর দেখে খুবই অবাক হলাম। কারণ দুইপাশে প্রাচীর দিয়ে এতটাই চাপানো যে একজন লিকলিকে মানুষেরও স্বাভাবিকভাবে যেতে কষ্ট হয়। জরুরি প্রয়োজনে একজন মানুষকে এই বাসা থেকে বের করার উপায় কি হবে, সেটির সদুত্তর কেউই দিতে পারলো না! আর স্থূল কোনে ব্যক্তি হলে দেয়াল ভাঙা ছাড়া ঢোকবার কোনো উপায়ই নেই! চাইলে কয়েক ইঞ্চি জায়গা ছেড়ে দেয়াই যেতে পারতো। কিন্তু ওই যে, আমাদের অতি আকাঙ্খার ধন জায়গা-জমি! আমাদের এই জায়গা সম্পত্তি নিয়ে এতই লিপ্সা যে, দিন দিন শত-সহস্র অঘটনের দায় এই জায়গা, সম্পত্তির উপরই বর্তায়!

নিতান্তই দীন, হীন ও অসহায় একটি পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তানও রাগ করে আজকাল ফাঁস নিচ্ছে! মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয় আজকাল আর শ্রেণি বিভাজন মানছে না! আমাদের সমাজে শিক্ষিত পরিবারেই এসব গুরুত্ব দেয়া হয় না, অন্য শ্রেণিভিত্তিক অবস্থানের কথা না হয় নাই-ই টানলাম!

মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ব্যাপকভাবে কাজ করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। প্রয়োজনে পাঠ্যপুস্তকের অন্তর্ভুক্তি আনয়ন জরুরি। বড়দের পাশাপাশি আমাদের শিশু, কিশোরদের জন্যও এটি অতীব জরুরি! মানসিক স্থিরতা থাকলে হয়তো ওই প্রাচীরওয়ালা বয়স্ক ব্যক্তিদ্বয় বুঝতে পারতেন, ঠিক কতটুকু জায়গা ছেড়ে দিলে মনুষ্যত্বের জয় হয়!

আহা প্রাচীর, আহা জায়গা, আহা কিশোর প্রাণ, আহা মনুষ্যত্ব!!

লেখক

অতিঃ উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্যান্টনমেন্ট জোন), 

গুলশান বিভাগ, ডিএমপি

আর্কাইভ