• ঢাকা শুক্রবার
    ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১

রায়হান হত্যা মামলার অভিযোগপত্র কাল

প্রকাশিত: মে ৪, ২০২১, ০৯:০২ পিএম

রায়হান হত্যা মামলার অভিযোগপত্র কাল

সিলেট ব্যুরো

পুলিশের নির্যাতনে নিহত রায়হান আহমদ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র প্রায় সাত মাস পর প্রস্তুত করেছে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বুধবার (৫ মে) চাঞ্চল্যকর এই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয়া হবে।

এ তথ্য জানিয়ে পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার খালেদ-উজ-জামান বলেন, ‘আদালতে জমা দেয়ার আগে দুপুর ১২টায় অভিযোগপত্র নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করা হবে।’

সিলেট নগরের আখালিয়া এলাকার তরুণ রায়হান আহমদ হত্যাকাণ্ডের অভিযোগপত্র প্রদানের দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে নানা সময়ই প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগপত্র প্রস্তুত হয়ে গেছে বলেও এক মাস পার করে দিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছে রায়হানের পরিবারও।

তবে পুলিশ সুপার খালেদ-উজ-জামান বলছেন, ‘অভিযোগপত্রে যাতে কোনো খুঁত না থাকে, যাতে তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন না ওঠে; এজন্য তদন্তে সবগুলো দিক খতিয়ে দেখা হয়েছে। এ কারণে কিছুটা সময় লেগেছে।’ 

তিনি বলেন, ‘আলোচিত এ মামলাটির আসামি পুলিশ হওয়ায় একটি নির্ভুল, ত্রুটিমুক্ত ও গ্রহণযোগ্য চার্জশিট তৈরি করতে কিছুটা সময় লেগেছে। এ ছাড়া করোনার বিরূপ পরিস্থিতির কারণেও কিছুটা দেরি হয়েছে।’

দীর্ঘদিন পর অভিযোগপত্র প্রস্তুত হওয়ার খবরে স্বস্তির কথা জানিয়েছেন রায়হানের মা সালমা বেগম। 

তিনি বলেন, ‘অনেকটা সময় পেরিয়ে গেলেও অবশেষে অভিযোগপত্র প্রস্তুত হয়েছে। তবে অভিযোগপত্রে যেন কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করা না হয়। ছেলেকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যাকারীদের দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’ 

গত বছরের ১১ অক্টোবর মধ্যরাতে নগরের আখালিয়া এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে ধরে আনে বন্দরবাজার ফাঁড়ির পুলিশ। নগরের কাষ্টঘর সুইপার কলোনি থেকে তাকে ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে যান ওই ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ও তার সহকারীরা। এর পর কয়েক ঘণ্টা চলে নির্যাতন। পরে ভোরে রায়হানের নিথর দেহ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলনে নামে মানুষ। 

১২ অক্টোবর রাতে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে সিলেটের কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নী।

পিবিআই-এর একটি সূত্র জানিয়েছে, ওই মামলার তদন্তে রায়হানকে নির্যাতনের সঙ্গে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ বরখাস্ত হওয়া এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া, বরখাস্ত হওয়া এসআই হাসান আলীসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্যের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। অভিযোগপত্রে তাদের আসামি করা হবে।

তবে রায়হান হত্যার পর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক পরিবর্তন ও প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে পালাতে সহায়তাকারী কথিত সাংবাদিক কোম্পানীগঞ্জের আবদুল্লাহ আল নোমানকে অভিযোগপত্রে আসামি করা হবে কি না তা এখনও নিশ্চিত করে জানা যায়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রায়হান হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর বন্দরবাজার ফাঁড়ির ছয় পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত করে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। এই ছয়জন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। 

তারা হলেন- বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া, টুআইসি এসআই হাসান আলী, এএসআই আশেকে এলাহী, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, কনস্টেবল তৌহিদ মিয়া ও কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস।


ডব্লিউএস/এম. জামান/
আর্কাইভ