নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সারা দেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী মডার্না টিকার প্রথম ডোজ দেয়া বন্ধের সিদ্ধান্তে মধ্যরাতেই টিকাকেন্দ্রগুলোতে দীর্ঘ লাইন শুরু হয়েছে। সারা দেশের মতো রাজধানী ঢাকাতেও টিকা নিতে মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। ফলে অধিকাংশ জায়গাতেই টিকা নিতে আসাদের অনেককে ফিরে যেতে হয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার কয়েকটি কেন্দ্রে ঘুরে দেখা গেছে, মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যার পর থেকে কেন্দ্রগুলোর সামনে ভিড় করতে থাকেন সাধারণ মানুষ। কেউ কেউ সারারাত লাইনে থাকার জন্য সঙ্গে নিয়ে এসেছেন বিছানা-মাদুর। কেউ এসেছেন চেয়ার বা টুল হাতে। অনেকে খাবারও নিয়ে এসেছেন। কেউ কেউ একসঙ্গে মিলে মোবাইলে লুডু খেলে বা গল্প করে সময় কাটানোর চেষ্টা করছেন। প্রতিটি কেন্দ্রে দুইশ থেকে তিনশ মানুষের লাইন দেখা গেছে।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে দেড়টার মধ্যে রাজধানীর রায়ের বাজার কমিউনিটি সেন্টার, হাতিরপুল মোতালেব প্লাজা-সংলগ্ন ও মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, টিকার জন্য লাইনে সাধারণ মানুষের ভিড়।
কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা গত তিন দিন ধরে অপেক্ষা করেছেন। লাইনেও দাঁড়িয়েছিলেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত টিকা পাননি। তাই মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর রাতের খাবার খেয়েই রাস্তায় লাইন ধরা শুরু করেছেন।
রাজধানীর রামপুরার একরামুন্নেছা বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে থাকা মুদি দোকানদারের স্ত্রী আমেনা বেগম বলেন, ‘ফজরের নামাজ পড়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ৩০০ জনের পেছনে আছি। এর আগে যারা এসেছে তারা রাত ১২টা-১টা; কেউবা আবার ২টার সময় এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন।’
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মী কবিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি রাত ২টার দিকে এসেছি, এখানে দাঁড়িয়ে আছি, ঘুমাতে পারিনি। এর মাঝে একবার শুধু মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ছি। আশা করি আজ টিকা পাব। আমার আগেও ১০০ মানুষ সিরিয়ালে আছে। আমার আগে যারা এসেছে তাদের মধ্যে রাত ৮টার সময়ও অনেকেই এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন।’
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্র জানায়, কোনো নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের টিকার প্রথম ডোজ দেয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ রেখে দিয়ে গণটিকাদান পরিকল্পনা সাজাতে হয়। এর আগে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দ্বিতীয় ডোজ না রেখে বেশিসংখ্যক মানুষকে প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছিল। পরে ভারত থেকে টিকা সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে প্রায় ১৪ লাখ মানুষ দ্বিতীয় ডোজ পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েন। তাদের দ্বিতীয় ডোজ দিতে দুই থেকে চার মাস দেরি হয়। জাপান থেকে আসা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়ে এখন দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হচ্ছে।
তরিকুল/সবুজ/এএমকে
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন