• ঢাকা শুক্রবার
    ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১

গণটিকাদানের দ্বিতীয় দিনে বেড়েছে ভিড় ও ভোগান্তি

প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২১, ০১:২২ পিএম

গণটিকাদানের দ্বিতীয় দিনে বেড়েছে ভিড় ও ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশজুড়ে শুরু হওয়া গণটিকাদান ক্যাম্পেইনের দ্বিতীয় দিন আজ। রোববার (৮ আগস্ট) সকাল থেকেই কেন্দ্রগুলোতে উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়। ফলে প্রথম দিনের তুলনায় ভোগান্তিও বেড়েছে। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর টিকা কার্ড না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন অনেকেই। 

স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের চিত্রও কোথাও দেখা যায়নি। রাজধানীর বিভিন্ন টিকাকেন্দ্রে একই হাল। 

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ৯টায় টিকা কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ৭টা থেকেই লোকজন আসতে থাকেন। অনেক কেন্দ্রে দেখা গেছে নারী-পুরুষের দীর্ঘ লাইন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী, কাউন্সিলর ও তার অনুসারীরা কেন্দ্রের শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন।

দায়িত্বরতরা জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, বয়স, নামসহ কয়েকটি তথ্য টিকা কার্ডে উল্লেখ করে একটি কার্ড দিয়ে দিচ্ছেন। সেটা দেখালে টিকা দেয়া হচ্ছে।

গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেও রাজধানীর মিরপুর ১৩ নম্বর সেকশনের মিন্টু সরণি-সংলগ্ন ২১ নম্বর সড়কের সূর্যের হাসি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ভিড় ছিল লক্ষণীয়। সেখানে কথা হয় টিকা নিতে আসা শরিফুল ইসলামের সঙ্গে। 

তিনি বলেন, ‘শুনেছি গতকাল (শনিবার) খুব ভিড় ছিল। তাই আজ (রোববার) সকাল ৮টায় এসেছি। তবু সেই ভিড়ের মধ্যে পড়লাম।’

এদিকে টিকা নিতে আসা অনেকেই জানেন না কার্ড সংগ্রহের নিয়ম। তারা শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে দাঁড়িয়েছেন লাইনে। এমনই একজন মহিতুন বেগম। 

তিনি বলেন,‘ আমরা তো খবরে দেখলাম, ভোটার কার্ড নিয়া এলেই টিকা দেবে। এখানে দেখছি উল্টো নিয়ম। টিকা কার্ড আবার কোথা থেকে নেব?’

আরেক ভুক্তভোগী শরিফুল আলম বলেন, ‘আমরা তো আগে কার্ড নেইনি। একজন বলল, কাউন্সিলর এসে কার্ড দেবে। আবার আরেকজন বলেছেন, আজ আর কার্ড দেয়া হবে না। আমরা কার কথা শুনব, বুঝতে পারছি না। তারা ঠিক করে বলুক।’

টিকাদান কার্যক্রমের সার্বিক দায়িত্ব পালনকারী সূর্যের হাসি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মকর্তা রনি আহমেদ জানান, ‘প্রথম দিন তাদের সাড়ে তিনশর মতো টিকা দেয়া হয়েছে। তবে মানুষের চাপ সামলানো যাচ্ছে না। অনেকের রেজিস্ট্রেশন করে রাখা হয়েছে। তাদেরকে আজ টিকা দেয়া হবে।’

শনিবার (৭ আগস্ট) থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ ক্যাম্পেইন চলবে ১২ আগস্ট পর্যন্ত। এই ছয় দিনে ৩২ লাখ মানুষকে টিকা দেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। 

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এই কর্মসূচির আওতায় ২৫ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠী, নারী, শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া দেশের ৪ হাজার ৬০০টি ইউনিয়ন, ১ হাজার ৫৪টি পৌরসভায় এবং সিটি করপোরেশন এলাকার ৪৩৩টি ওয়ার্ড-এর আওতায় আনা হয়েছে। যেখানে ৩২ হাজার ৭০৬ জন টিকাদানকর্মী ও ৪৮ হাজার ৪৫৯ জন স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছেন।  

গণটিকা কর্মসূচির প্রথম দিন ২৭ লাখের বেশি মানুষকে দেয়া হয়েছে প্রথম ডোজ। এর মধ্যে ১৫ লাখ ১৪ হাজার ৯৩৮ জন পুরুষ এবং ১২ লাখ ৬৮ হাজার ২৩৬ জন নারী। টিকা নেয়াদের মধ্যে চীনের সিনোফার্মের টিকা নিয়েছেন ২৪ লাখ ৯৯ হাজার ৪৫১ জন নারী ও পুরুষ। অন্যদিকে মডার্নার টিকা নিয়েছেন ২ লাখ ৮৩ হাজার ৭২১ জন। এদিন চাহিদা অনুযায়ী টিকার বরাদ্দ না থাকায় অনেক মানুষকে ফেরত যেতে হয়েছে।

টিআর/সবুজ/এএমকে
আর্কাইভ