ইতালি প্রবাসী ইব্রাহিমের দ্বিতীয় মেয়ে সীমা। তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ আকাশের। ভালোবাসার টানে এক বছর আগে প্রেমিকের হাত ধরে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বিয়ে করেছে সীমা। কখনো চট্টগ্রাম আবার কখনো ঢাকায় অবস্থান করে তারা।
কয়েক মাস পূর্বে ঢাকার উত্তর বাড্ডা সংলগ্ন ভাটারা থানা এলাকায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আকাশ। সেই ফ্ল্যাটেই থাকছিল এই যুগল। ইতোমধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হয় সীমা। দেড় মাস পূর্বে আকাশের পরিবারও রাতের আঁধারে কুঠিরহাটের বাসা থেকে মালামাল নিয়ে ঢাকায় উঠে।
গত বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে আকাশের মোবাইল থেকে এক মহিলা ফোন দেয় সীমার বাবাকে। ওই মহিলা তাদের ঢাকার বাসার পাশের ফ্ল্যাটেই থাকত। তিনি সীমার বাবাকে বলে, 'আপনার মেয়ে মারা গেছে। আপনি ঢাকায় এসে ওর লাশ নিয়ে যান।
এ খবরে নিস্তব্ধ হয়ে পড়েন সীমার বাবা ইব্রাহিম। মেয়ের লাশ আনতে যান ঢাকায়। সেখানে গেলে তাকে বলা হয়, সীমা আত্মহত্যা করেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার ময়নাতদন্ত শেষে সীমা ও তার ভূমিষ্ঠ নবজাতকের লাশ ইব্রাহিমের কাছে হস্তান্তর করে। ওইদিন বাদ মাগরিব জানাজা শেষে গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে সীমা ও তার নবজাতককে দাফন করা হয়।
মারা যাওয়া সীমার বাড়ি ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরমজলিশপুর ইউনিয়নের চরগোপালগাঁও গ্রামে। তিনি ফেনী জয়নাল হাজারী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। আর একই উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের মৃত ওবায়দুল হকের ছোট ছেলে আবদুল্লাহ আল মাহমুদ আকাশ।
এ ঘটনায় আকাশকে আসামি করে সীমার বাবা ভাটারা থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
সীমার বাবা ইব্রাহিম অভিযোগ করে বলেন, 'আমার মেয়েকে প্রতারণা করে বিয়ে করেছিল আকাশ। সে পরিকল্পিতভাবে সীমাকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।'
আকাশ নিজেকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আইটিবিষয়ক কনসালটেন্ট দাবি করে বলে এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে। এমনকি তিনি সরকারি অফিসসহ বিভিন্ন দফতরে চাকরি দেয়ার নাম করে লাখ লাখ টাকা আদায় করেছে। এ নিয়ে তার এলাকায় একাধিক সালিশ বৈঠক হয়েছে। কয়েকটি স্থানে আকাশকে আটকে রেখে ভুক্তভোগী পরিবার টাকাও আদায় করেছে।