নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েই চলেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘোষণা করা হয়েছে লকডাউন। কিন্তু কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না মানুষকে। জীবন জীবিকার তাগিদে বাধ্য হয়ে বের হচ্ছে তারা। ফলে রাস্তায় শুধু গণপরিবহন ছাড়া আর সব গাড়ি চলছে। আবার মার্কেট বন্ধ থাকলেও রাস্তার ফুটপাতে খোলা রয়েছে দোকানপাট। বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) আন্ত মন্ত্রণালয় বৈঠকে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার রোধে চলমান লকডাউনের সময়সীমা পাঁচ দিন বাড়িয়ে ১০ আগস্ট করা হয়েছে। এই ঘোষণার পর রাজধানীতে যে চিত্র দেখা গেছে, তাকে ঠিক লকডাউন বলা যাবে কিনা এমন প্রশ্ন উঠেছে।
ঈদের ছুটির পর ২৩ জুলাই থেকে ফের শুরু করা লকডাউন ‘কোনোভাবে শিথিল করা হবে না’ বলা হলেও শিল্পকারখানার মালিকদের অনুরোধে ১ আগস্ট থেকে রফতানিমুখী শিল্পকারখানা খুলে দেয়া হয়। এরপর থেকে কার্যত লকডাউন আর কার্যকর নেই। শ্রমিকেরা কর্মস্থলে ফেরায় রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকায় মানুষজনের চলাচল বেড়েছে অনেক গুণ বেশি। বেড়েছে যানবাহন চলাচলও। বুধবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ৪২৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত ১৭৯ জনকে তিন লাখ ৭৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ ৪০৭টি গাড়িকে বিনা কারণে বের হওয়ার দায়ে প্রায় ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে।
রাজধানীর ফকিরাপুল, নয়াপল্টন, শান্তিনগর, মগবাজার ও মিরপুর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মার্কেট ও শপিংমলগুলো বন্ধ আছে। তবে নিত্যপণ্যের দোকান ও হোটেল রেস্তোরাঁসহ অন্যান্য দোকান পুরোদমে বেচাকেনা করছে। এসব এলাকায় বইয়ের দোকান থেকে হার্ডওয়্যারসহ প্রায় সব ধরনের দোকানই খোলা দেখা গেছে। পুলিশের টহল বা তল্লাশি চৌকিও দেখা যায়নি। সব জায়গায় স্বাভাবিক সময়ের মতো লোকজন ঘোরাঘুরি করেছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মাস্কও পরেননি। কারও মাস্ক থুতনিতে ঝুলছে।
আগারগাঁও মোড়ে দেখা যায়, রাস্তায় নানা ধরনের যানবাহনের চাপ বেড়ে শ্যামলী থেকে বাংলাদেশ বেতার পর্যন্ত যানজট তৈরি হয়েছে। এনবিআর ভবনের পাশ থেকে ভাগাভাগি করে রিকশায় বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে অনেককেই।
পুরান ঢাকার আজিমপুর, পলাশী, লালবাগ চৌরাস্তা এলাকায় গতকাল সকাল থেকে অলিগলি, মুদি দোকান, কাঁচাবাজারে মানুষের আনাগোনা বাড়তে দেখা গেছে। বাজারগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। এদিকে এতদিন শাটার অর্ধেক নামিয়ে বেচাকেনা করা হতো যেসব দোকানে, তার পুরোটাই এখন খোলা। বন্ধ রেখে যে দোকানের সামনে বসে থাকতেন কর্মচারীরা, সেখানে এখন স্বাভাবিক সময়ের মতো ব্যস্ততা।
জেডআই/সবুজ/নির্জন
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন