
প্রকাশিত: এপ্রিল ১০, ২০২৫, ১০:০৯ এএম
মার্চেও দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি হতাশাজনক ছিল বলে জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)। সংস্থাটির দাবি, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার রমজানে দ্রব্যমূল্য ও ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক ছিল। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। এ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় মৃত্যু, নারী নিপীড়ন ও ধর্ষণ, শিশু নির্যাতন, গণপিটুনি ও হত্যা এবং শ্রমিক নির্যাতন ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ, সংখ্যালঘু নির্যাতন, কারাগারে হেফাজতে মৃত্যু, মাজারে হামলা ও ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটছে। চাঁদাবাজি, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, হত্যাসহ সামাজিক অপরাধ বৃদ্ধিতে জনমনে ভয় ও আতঙ্ক তৈরি করছে। বুধবার এইচআরএসএস’র নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মার্চে কমপক্ষে ৯৭টি ‘রাজনৈতিক সহিংসতার’ ঘটনায় অন্তত ২৩ জন নিহত এবং কমপক্ষে ৭৩৩ জন আহত হয়েছে। এরমধ্যে বিএনপির অন্তর্কোন্দলে ১৭ জন, বিএনপি-আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে ২ জন, বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষে ১ জন, বিএনপি-এনসিপির সংঘর্ষে ২ জন এবং আওয়ামী লীগের অন্তর্কোন্দলে ১ জন নিহত হয়েছেন। নিহত ২৩ জনের মধ্যে বিএনপির ১৮ জন, আওয়ামী লীগের ৩ জন এবং ইউপিডিএফের ২ জন। আধিপত্য বিস্তার, রাজনৈতিক প্রতিশোধ পরায়ণতা, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন স্থাপনা দখল কেন্দ্রিক অধিকাংশ সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, মার্চে দুষ্কৃতকারীদের দ্বারা রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীদের ওপর অন্তত ৮টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ৪ জন, বিএনপির ৪ জন ও চরমপন্থি দলের ১ জনসহ অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া এ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় ৩০ জনের বেশি গুলিবিদ্ধ, অর্ধশতাধিক বাড়িঘর, যানবাহন, ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, মার্চে কমপক্ষে ২৮৪ জন নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন কমপক্ষে ১৩৩ জন। যাদের মধ্যে ৮৩ জন ১৮ বছরের কম বয়সি শিশু। একজনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
গেল মাসে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ৬টি হামলার ঘটনায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে ২ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে আরাকান আর্মির গুলিতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ২ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ মাসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নামে কমপক্ষে ২২টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ২১১৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ২৭৩৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
এ মাসে রাজনৈতিক মামলায় কমপক্ষে ১৬৬৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী অন্তত ১৬৪৪ জন। এ ছাড়া পুলিশ এ মাসে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরের অন্তত ৪৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। এ মাসে সারা দেশে কারাগারে কমপক্ষে ৪ জন আসামি মারা গেছেন।