
প্রকাশিত: এপ্রিল ৭, ২০২৫, ০২:৫৬ পিএম
এ বছর পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ না খাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপরে সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন তিনি এ আহ্বান জানান।
জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ -২০২৫ উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে উপদেষ্টা চৈত্র সংক্রান্তি পালনের সঙ্গে পহেলা বৈশাখে বাতাসা, দই, চিড়া, মিষ্টি, ছাতুর সরবত, ভাত, শাক, সবজি ইত্যাদি খাওয়ার আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, মানুষ পহেলা বৈশাখে ইলিশ খায় কেমন করে। এ সময় তো ইলিশ পাওয়ার কথা নয়। পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ আমাদের সংস্কৃতির অংশ নয়। এটি আমি পরিষ্কার করতে চাই।
তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখে যারা ইলিশ খাবেন, তারা জাটকা-ই খাবেন। একই সঙ্গে তারা আইন লঙ্ঘন করবেন। কাজেই বাজারে পাওয়াটাও আইনের লঙ্ঘন হয়। এই সময়ে আমরা জোরালোভাবে জাটকা সংরক্ষণ বিষয়ে সচেতন করার জন্য আমরা বলেছি।
তিনি আরও বলেন, ১৪ এপ্রিল পান্তার সঙ্গে ইলিশ খাওয়া হয়, সেটা যেন না খাওয়া হয়, সেই অনুরোধ করব। কারণ এ সময় ইলিশ নয়, জাটকা খাওয়া হয়। সেই হিসেবে জাটকা সংরক্ষণ করে ইলিশে রূপান্তর করার আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে এ বছর পান্তা-ইলিশ না খাওয়ারও আহ্বান জানাই।
ফরিদা আখতার বলেন, যারা ঢাকায় থাকেন তারা পান্তা-ইলিশ চালু করেছেন। এটি আরোপিত সংস্কৃতি। বরং পহেলা বৈশাখের আগের দিন বাঙ্গালি সংস্কৃতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেটি হলো চৈত্র সংক্রান্তি, সেখানে কোনো আমিষ খাওয়া হয় না। সেদিন ১৪ রকমের শাক খাওয়া হয়। আপনারা চৈত্র সংক্রান্তি পালন করবেন। পহেলা বৈশাখে বাতাসা খান, দই, চিড়া, মিষ্টি, ছাতুর সরবত খান, ভাত, শাক, সবজি খান, ইলিশ বাদে অন্য মাছ খান।
তিনি বলেন, কোল্ড স্টোরেজ থেকে মজুত করা ইলিশ বাজারে আসার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা চাই না সেটা বাজারে আসুক। পহেলা বৈশাখে পান্তার সঙ্গে ইলিশ না খেয়ে ভর্তা, পোড়া মরিচ খেতে পারেন। জেলেরা তাদের জীবন-জীবিকা ঝুঁকিতে রেখে মাছ ধরা বন্ধ রাখতে পারেন। তাহলে আমরা কেন একদিন ইলিশ খাওয়া বন্ধ করতে পারব না?
ভারতে ইলিশ রপ্তানির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আগে দুর্গাপূজা আসুক, তখন দেখা যাবে। আমাদের ইলিশ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। সেটি এখনো আছে। তবে আমরা প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য কিছু ছাড় দিয়েছি। সেখানে নিদিষ্ট কিছু দেশে আছে যেখানে আমাদের বাংলাদেশিরা রয়েছে তাদের ইলিশ খাওয়ানোর জন্য এটি করা হয়েছে।
বাংলাদেশে যখন ইলিশ ধরা বন্ধ থাকে, তখন ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে ইলিশ ধরে নিয়ে যায়, এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ফরিদা আখতার বলেন, এবার সেই সুযোগ নেই। আমরা বৈজ্ঞানিকভাবে সময়টা নির্ধারণ করেছি। ভারতও বৈজ্ঞানিকভাবে কিছু একটা করে। এখন আর সেই সুযোগ থাকবে না।