
প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২৫, ১২:৫৯ পিএম
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যমটি।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নেবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত দলটিকেই নিতে হবে। এ ছাড়া নির্বাচনে কারা অংশগ্রহণ করবে, তা নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেয় বলেও জানিয়েছেন নোবেলজয়ী এ অর্থনীতিবিদ।
ছাত্র-জনতার তীব্র গণআন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর নতুন সরকারের দায়িত্ব নিতে বলা হলে তিনি চমকে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন ড. ইউনূস।
তিনি বলেন, আমার কোনো ধারণাই ছিল না যে, আমি সরকারের নেতৃত্ব দেব। আমি এর আগে কখনো সরকারি কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করিনি এবং এরপরও পরিস্থিতি বুঝে ঠিকভাবে কাজ করতে হয়েছিল।
নোবেল পুরস্কার বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, একবার এটি স্থির হয়ে গেলে আমরা অন্যান্য কিছু জিনিস সংগঠিত করতে শুরু করি। যার মধ্যে— আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করা এবং অর্থনীতি ঠিক করা দেশের জন্য অগ্রাধিকার ছিল।
শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে তিনি সেদেশেই রয়েছেন। নাটকীয় এই পটপরিবর্তনের পর একে একে বের হয়ে আসছে সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ নানা চিত্র। হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, দাবি উঠেছে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারেরও।
অধ্যাপক ইউনূস ঢাকায় তার সরকারি বাসভবনে বিবিসিকে দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে বলেন, তাদের (আওয়ামী লীগকে) সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা এটা (নির্বাচন) করতে চায় কিনা, আমি তাদের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। নির্বাচনে কারা অংশগ্রহণ করবে তা নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়।
তিনি বলেন, শান্তি ও শৃঙ্খলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস এবং এরপর অর্থনীতি। (সাবেক সরকারের রেখে যাওয়া) এটি এক ছিন্নভিন্ন অর্থনীতি, বিধ্বস্ত অর্থনীতি। এটা এমন কিছু যেন ১৬ বছর ধরে কিছু ভয়ানক টর্নেডো হয়েছে এবং আমরা এখন টুকরোগুলো তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তিনি ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করবেন। তার সরকার কত দ্রুত সংস্কার করতে পারে তার ওপর নির্বাচনের এই সময়সীমা নির্ভর করছে। কারণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এসব সংস্কারকে প্রয়োজনীয় বলে মনে করেন তিনি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যদি আমাদের ইচ্ছামতো দ্রুত সংস্কার করা যায়, তাহলে ডিসেম্বরে আমরা নির্বাচন করতে পারব। আর যদি সংস্কারের পরিমাণ বেশি হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের আরও কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।
গত গ্রীষ্মে বাংলাদেশকে ঘিরে থাকা সহিংস বিক্ষোভের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলা থেকে এসেছি। (এমন বিশৃঙ্খলা যেখানে) মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।