• ঢাকা শুক্রবার
    ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
আদালতের পর্যবেক্ষণ

রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতেই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো মামলা

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫, ০৫:০১ পিএম

রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতেই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজনৈতিক কারণে ও হয়রানি করার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের নাইকো মামলায় জড়ানো হয়েছিল। আজ বুধবার এই মামলায় সবাইকে খালাস ঘোষণা করে রায় দেওয়ার আগে পর্যবেক্ষণে একথা বলেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম।

এই মামলায় খালেদা জিয়া বাদে আরও খালাস পেয়েছেন তৎকালীন মুখ্য সচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এমএএইচ সেলিম।

বুধবার বেলা ১১টা ২৪ মিনিটে রায় ঘোষণা করতে বিচারক এজলাসে ওঠেন। বিচারক বলেন, ‘প্রশ্ন হতে পারে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে কীভাবে আসামির আত্মপক্ষ শুনানি করা হচ্ছে। ডিএলআর এর ১৭ থেকে ২১ পর্যন্ত এ বিষয়ে বলা আছে। কোনো আসামি আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরায় থাকলে তাঁর অনুপস্থিতিতে আত্মপক্ষ শুনানি করা যায়। আবার রায়ও দেওয়া যায়। সেই অনুযায়ী রায় দেওয়া হচ্ছে।’

পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেছেন, ‘একই ধরনের মামলা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও ছিল। যেহেতু এ মামলা চলে নাই, তবুও এ মামলার ফুল ট্রায়াল হয়েছে। আসামি সেলিম ভুঁইয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এর আগে তিনি চার দিনের রিমান্ডে ছিলেন। তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করা হয়। পরে অবশ্য তা প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়। সেখানেও বলেছেন তাঁকে শারীরিক, মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।’

বিচারক বলেন, ‘মামলা তেজগাঁও থানার। কিন্তু তাঁকে রাখা হয় গুলশান থানায়। সেখানে নির্যাতনের পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষকে ডিনাই করছে। তাদের এটা জানাও নাই। রেকর্ডে দেখা গেছে, তাঁকে যে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো বহির্বিভাগ টিকিটও আছে। তাঁকে বাইরে থেকে ওষুধও কিনে দেওয়া হয়, এর রশিদও আছে।’

‘সেলিম ভূঁইয়াকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে ১৬৪-এ জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। সে কারণে এই ১৬৪-কে ট্রু (সত্য) বলার সুযোগ নেই। এর উদ্দেশ্য হলো গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, কাশেম শরীফসহ অন্যদের জড়িত করার জন্য কিন্তু জোরপূর্বক এ ১৬৪ গ্রহণ করা হয়েছে। রাজনৈতিক কারণে এবং হয়রানি করার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের জড়িত করা হয়েছে।’

পরে আদালত তাদের খালাসের রায় দেন।

মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। তাঁর পক্ষে আইনজীবী হাজিরা দেন। জামিনে থাকা অপর আসামিরা আদালতে হাজির হন।

এদিকে, সব আসামি খালাস পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

জাতীয় সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ