• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১

সুপারিশ নিয়ে আপত্তি ইসির, সংস্কার কমিশন বলছে ‘ক্ষমতা বাড়ানোই লক্ষ্য’

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২৫, ১০:১৫ এএম

সুপারিশ নিয়ে আপত্তি ইসির, সংস্কার কমিশন বলছে ‘ক্ষমতা বাড়ানোই লক্ষ্য’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

কিছু সুপারিশ নিয়ে সংস্কার কমিশনের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। কয়েকটি সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে ইসির স্বাধীনতা খর্ব হবে বলে মনে করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)। তবে এই দাবি মানতে নারাজ সংস্কার কমিশন। তারা বলছে, স্বাধীনতা খর্ব নয়, বরং নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বাড়ানো ও জবাবদিহির আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে।

গত ১৫ জানুয়ারি নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারে সুপারিশমালার সারসংক্ষেপ প্রকাশ করা হয়। যা নিয়ে মধ্য ফেব্রুয়ারি থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে অন্তর্বর্তী সরকার।

সুপারিশে আছে, নির্বাচন কমিশনাররা সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে ও শপথ ভাঙলে মেয়াদ পরবর্তী সময়ে সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে তদন্ত করে সুপারিশসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর বিধান করতে হবে। ভবিষ্যতে সীমানা নির্ধারণে আলাদা স্বাধীন সীমানা নির্ধারণ কর্তৃপক্ষ গঠন ও জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন সংস্থা নামে একটি স্বতন্ত্র স্বাধীন সংবিধিবদ্ধ সংস্থা গঠনের কথাও বলা হয়েছে।

সংস্কার কমিশনের অন্তত তিনটি সুপারিশের কড়া সমালোচনা করেছেন সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘অনেকগুলো সুপারিশ আছে যেগুলো কার্যকর হলে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা খর্ব হবে, এটি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। যেমন, আমাকে যদি পার্লামেন্টের স্ট্যান্ডিং কমিটির কাছে যেতে হয়, তাহলে আমার স্বাধীনতা কোথায় থাকল।’

তবে সিইসির এই বক্তব্য নাকচ করে সংস্কার কমিশন প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলছেন, ইসির ক্ষমতা কমানো নয় বরং বাড়ানোর সুপারিশ করেছেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করেছি। তাঁরা যেন তাঁদের কাজ সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে পারে সেটিই আমরা করার চেষ্টা করেছি।’

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. মো. আব্দুল আলীম, ‘সীমানা নির্ধারণ একটি প্রায়োগিক কাজ, টেকনিক্যাল কাজ। এটির সঙ্গে পরিসংখ্যানবিদ, ভুগোলবিদ—এদের জড়িত হওয়ার দরকার হয়। এবং এটা ইলেকশন কমিশন যখন করে তখন একটা বিতর্কের সৃষ্টি হয়। যেটা আমরা গত ১৫ বছরে অনেকবার দেখেছি। কমিশনের সুপারিশ যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে ইলেকশন কমিশন প্রকৃত অর্থে একটি শক্তিশালী কমিশনে রুপান্তরিত হবে।’

অতীতে দায়বদ্ধতার সুনির্দিষ্ট কোনো জায়গা না থাকায় নির্বাচন কমিশন নির্বাচনি অপরাধ করেও পার পেয়েছে। এ চিন্তা থেকেই ইসিকে দায়বদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছে বলে মনে করে সংস্কার কমিশন।

ড. মো. আব্দুল আলীম বলেন, ‘স্বাধীনতা মানে তো আমার যা ইচ্ছা তাই আমি করব তা হতে পারে না। এবং এরকম কোনো ম্যাকানিজম যদি থাকত তাহলে অতীতে যারা নির্বাচন করেছেন তাঁরা নিজেদের প্রশ্ন করতেন যে, তাঁদের কেউ দেখছেন। তখন তাঁরা এমন নির্বাচন করার সাহস পেত না, অনেকেই হয়ত পদত্যাগ করে চলেও যেতেন।’

ইসির জনবল ও বাজেটের দায়িত্ব সংসদীয় কমিটির হাতে দেওয়ার সুপারিশ নিয়েও মতবিরোধ দেখা দিয়েছে সিইসি ও সংস্কার কমিশনের মধ্যে।

জাতীয় সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ