• ঢাকা শুক্রবার
    ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১

এলপিজি থেকেই মগবাজারের বিস্ফোরণ

প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২১, ০৩:১২ এএম

এলপিজি থেকেই মগবাজারের বিস্ফোরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

মগবাজারে বিস্ফোরণের মূল কারণ এলপিজি গ্যাস। পেট্রোবাংলায় জমা দেয়া নিজেদের প্রতিবেদনে এমনি কথা উল্লেখ করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।

এর আগে বিস্ফোরণের তদন্তের জন্য তিতাসে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। যেখানে প্রতিষ্ঠানটির ভিজিল্যান্স ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রধান করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে তিতাস জানায়, ঘটনাস্থলে থাকা শর্মা হাউজ রেস্তোরাঁয় তিতাস গ্যাসের কোনো সংযোগ চালু ছিল না। সেখানে এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহার করা হতো। সরেজমিন রান্নাঘরে সিলিন্ডার পাওয়া যায়। যে স্থানে সিলিন্ডার ছিল তার পাশেই মূল বিস্ফোরণ হয়েছিল বলে দেখা যায়।

তদন্ত কমিটি আরও জানায়, সেখানে একটি পরিত্যক্ত রাইজারও পাওয়া গেছে। তবে রাইজারটিতে গ্যাস সংযোগ ছিল না। তবে গ্যাস সংযোগ না থাকলেও সেখানে রাইজার কীভাবে গেলো তা নিয়ে প্রতিবেদনে কিছুই উল্লেখ করা হয়নি।

এ দিকে বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে ফায়ার সার্ভিস জানায়, ওই বিস্ফোরণের মূল কারণ জমে থাকা গ্যাস। আর সেই গ্যাস ভবনের নিচতলায় বেঙ্গল মিটের দোকানে জমে ছিল। এই দোকান থেকেই বিস্ফোরণ হয়েছে।

গত ২৭ জুন সন্ধ্যার পর মগবাজারের ওয়্যারলেস এলাকায় একটি তিনতলা ভবনের নিচতলায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ভবনের নিচতলা পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। এ ঘটনায় ১২ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন দুই শতাধিক। বিস্ফোরণের সময় বিকট শব্দে আশপাশের অন্তত সাতটি ভবনের কাঁচ উড়ে যায়। রাস্তায় থাকা তিনটি বাসের কাঁচ ভেঙে যায়।

দুর্ঘটনার পরদিন অর্থাৎ ২৮ জুন ফায়ার সার্ভিস গ্যাস ডিটেক্টর দিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে বলেছিল, ঘটনাস্থলে মিথেন গ্যাসের গন্ধ পাওয়া গেছে। একই কথা বলেন বিস্ফোরক পরিদফতর থেকেও।

তিতাস তাদের ব্যাখ্যায় জানায়, দুর্ঘটনাস্থলের সামনের রাস্তায় তাদের গ্যাস পাইপলাইনটি সিটি করপোরেশনের ড্রেন নির্মাণের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেখান থেকে মিথেন গ্যাসের গন্ধ পাওয়া যেতে পারে। সুয়ারেজ লাইনের মধ্যে যে বায়োগ্যাস তৈরি হয় সেখান থেকেও তা ঘটনাস্থলে আসতে পারে।

বিস্ফোরণের ঘটনায় ‘অবহেলাজনিত মৃত্যুর’ অভিযোগ এনে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে গত ২৯ জুন রমনা থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। মামলাটি প্রথমে থানা–পুলিশ তদন্ত করলেও পরে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটে হস্তান্তর করা হয়।

সিটিটিসি তিনতলা ভবনের মালিক মসিউর রহমানকে গ্যাসের সংযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তখন ভবনমালিক বলেছিলেন, কয়েক বছর আগে গ্যাসের লাইনটি তারা ব্যবহার করতেন। পরে গ্যাস–সংযোগ তারা বিচ্ছিন্ন করে দেন। গ্যাসের লাইনটি অবৈধ বলেও পুলিশের কাছে স্বীকার করেছিলেন তিনি।

বিস্ফোরণের ওই ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস, তিতাস গ্যাস, বিস্ফোরক পরিদফতর এবং পুলিশ সদর দফতর থেকে পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে।

মামুন

আর্কাইভ