প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪, ০২:৪৬ পিএম
দেশের আইন ও বিধিমালা মেনে ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ খাতের আঞ্চলিক সহযোগিতার বলয়ে কাজ করতে প্রস্তুত বাংলাদেশ। আর সে কারণেই নীতিমালায় কোনো সুযোগ না থাকায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যে ইন্টারনেট ট্রানজিটের প্রস্তাব নাকচ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
দেশের দুই ইন্টারন্যাশনাল টেলিস্ট্রেরিয়াল ক্যাবল (আইটিসি) কোম্পানি সামিট কমিউনিকেশনস ও ফাইবার এট হোম ভারতের টেলিকম অপারেটর ভারতী এয়ারটেলের সঙ্গে মিলে এই উদ্যোগ নিয়েছিল। বিগত সরকারের সময় অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় থাকা অবস্থায় শেষ মুহূর্তে বিটিআরসি এই প্রস্তাবে সায় দেয়নি।
এর কারণ হিসেবে বিটিআরসি বলছে, এখানে অন্য কোনও ইস্যু নেই। কেবলমাত্র নীতিমালয় ট্রানজিট দেয়ার বিধান নেই।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, বাইরের যেকোনো জায়গা থেকে যদি একটা ডেটা আসে, তা আমাদের এখানে ল্যান্ড করার কথা, সেখান থেকে রিসেল করার অনুমতি আছে আমাদের। ট্রানজিট দেয়ার বিষয়টি নীতিমালায় নেই। আমাদের কাছে প্রস্তাব এলেও নীতিমালায় না থাকায় আমরা এ বিষয়ে অনুমোদন দিই নাই।
সরকরারের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে খাত সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, ট্রানজিট দেয়া হলে আঞ্চলিক হাব হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান দুর্বল হবে। বিটিআরসির সিদ্ধান্তের ফলে ভারতের সাত রাজ্যে বাংলাদেশের ব্যান্ডউইথ রফতানির দ্বার প্রসারিত হবে।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, গুগল-ফেসবুক কিন্তু কলকাতায় হাব করেছে। সেখান থেকে আইটিসির মাধ্যমে আমরা ব্যান্ডউইথ নিয়ে আসতেছি। ঠিক তারাও আমাদের কাছ থেকে আইটিসির মাধ্যমে ব্যান্ডউইথ আমদানি করুক। আমি কিন্তু ট্রানজিটের পক্ষে না। কারণ, তারা তো আমাকে ট্রানজিট দিচ্ছে না।
নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত না হলে নতুন করে প্রস্তাব এলেও তা বিবেচনার সুযোগ নেই । স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সুরক্ষার বিষয়টি অগ্রাধিকার পাবে, এমন অভিমত বিটিআরসির।
এমদাদ উল বারী বলেন, ট্রানজিট দেয়ার মতো প্রক্রিয়াটি নির্দিষ্ট দুই-একটা লাইসেন্সধারীকে এটা সুবিধা দেয়। যেটা আবার সুস্থ প্রতিযোগিতার জন্য উপযোগী নয়। আমরা ব্যবসার স্থায়িত্ব দেখবো। আমরা আঞ্চলিক সহযোগিতার কথা বলবো, কিন্তু সেটা পারস্পরিক ভিত্তিতে হতে হবে। তাই ব্যবসার স্থায়িত্ব থাকলে, পারস্পরিক ভিত্তিতে হলে তা আমরা করতে পারি। আর অন্য কোনো কারণ হলে সরকার যেভাবে বলবে আমরা সেভাবে করবো।
প্রযুক্তিবিদরা মনে করছেন, ট্রানজিট দেয়ার প্রস্তাব নাকচ হওয়ায় গুগল ও মেটার মতো প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে এজড পপ ও ডেটা সেন্টার স্থা্পনে আগ্রহী হবে।