• ঢাকা রবিবার
    ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১

উচ্চ আদালতে রাজনৈতিক সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কমাতে পদক্ষেপ চান আইনজীবীরা

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪, ১০:১২ এএম

উচ্চ আদালতে রাজনৈতিক সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কমাতে পদক্ষেপ চান আইনজীবীরা

সিটি নিউজ ডেস্ক

সরাসরি লেনদেনের চেয়ে উচ্চ আদালতে অনিয়মের বেশি অভিযোগ রাজনৈতিক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। এর জন্য শুধু সংস্কার নয়, দুর্নীতি দূর করতে আইনজীবীরা জোর দিচ্ছেন এই সিন্ডিকেট নির্মূলে। আদালতে কারও দলীয় পরিচয়কে গুরুত্ব না দেওয়ার দাবি তাঁদের। তবে আইন কর্মকর্তারা বলছেন, আগের সরকারের দুর্নীতির ধারা বন্ধে সময় আরও প্রয়োজন।

সত্যিকারের স্বাধীন ও দুর্নীতিমুক্ত বিচারবিভাগ গড়তে আলাদা সচিবালয় ও বিচারপতি নিয়োগে স্বাধীন কমিশন গঠনসহ নেওয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। কিন্তু এর মাধ্যমে কী সহসাই উচ্চ আদালতে দুর্নীতি-অনিয়ম দূর হবে—এই প্রশ্নের উত্তরে বিগত দিনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে আইনজবীরা বলছেন, সুপ্রিমকোর্টে মূলত বড় অনিয়ম হয় রাজনৈতিক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে।

আদালতের আদেশ কিংবা রায়ে থাকে দলীয় আইনজীবী নেতাদের প্রভাব। তাঁরা দক্ষ না হলেও বিচারপ্রার্থীদের ভিড় কমে না। অনেক সময় বিচারকের সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাতের লোভ দেখিয়ে নেওয়া হয় মোটা অংকের ফি। আইনজীবীরা বলছেন, এই সিন্ডিকেট ভাঙতে দায়িত্ব নিতে হবে বিচারক, আইনজীবীসহ সকলের।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, ‘ব্যারিস্টার রফিকুল হক, ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদের কাছ থেকে ব্রিফ কেড়ে নিয়ে গ্রামীণ ফোন থেকে শুরু করে অনেক কোম্পানি তাপসকে (ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস) নিয়োগ দিয়েছে, যে তাপস হাঁটুর বয়সীও না। তাপস অনুগত কেউ দাঁড়ালেই তদানীন্তন প্রধান বিচারপতিরা পর্যন্ত নার্ভাস হয়ে যেত। এই বুদ্ধিভিত্তিক দুর্নীতির আর্থিক মূল্য হিসেব করলে তা কয়েক হাজার কোটি টাকা ছাড়াবে।’
 
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, ‘সকল বিচারকের আয়-ব্যয়ের ও সম্পদের হিসাব থাকা উচিত। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।’

শুধু আইনজীবী নন, দুর্নীতি-অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন খোদ বিচারপতিরাও। সম্প্রতি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল মোকবিলা না করেই দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তিন বিচারপতির পদত্যাগই এর বড় প্রমাণ বলে বলছেন আইনজীবীরা। অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের দাবি, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে আগের চেয়ে অনিয়ম কমেছে।

অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক বলেন, ‘আগের অবস্থার চেয়ে পুরোপুরি পরিবর্তন হয়েছে সেটা আমরা বলতে পারছি না। কিন্তু অনেকাংশেই পরিবর্তন হয়েছে। যারা মক্কেল তাঁরা মনে করেন যে, এই আইনজীবীকে ধরে ওই বিচারপতির কাছে গেলে হয়ত একটা সুবিধা পাব বা তিনি একটু রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ওনাকে নিলে আমার সুবিধা হবে।’

আইনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় নেই। সেজন্য এখনই বিচারবিভাগের সিন্ডিকেট ভাঙার মোক্ষম সময়।

জাতীয় সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ