• ঢাকা মঙ্গলবার
    ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা সংশোধিত বাজেটে

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪, ১০:৪৫ পিএম

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা সংশোধিত বাজেটে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সংশোধিত বাজেটে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা খাতে বরাদ্দ রাখার চিন্তাভাবনা চলছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাজেট-ঘাটতি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে উন্নয়ন বাজেট সমন্বয় করতে হবে। সরকারি কর্মচারীদের বহু ধরনের দাবি-দাওয়া মেটাতে গিয়ে বেতন-ভাতা বাড়ানোর বিষয় আছে। মহার্ঘ ভাতার বিষয় আছে। তাই রাজস্ব খাতে ব্যয় কমিয়ে রাখা খুবই কঠিন। কাজেই সবকিছু উন্নয়ন বাজেট ওপর এসে পড়ে। উন্নয়ন বাজেট কমাতে হবে।

সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেকের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট সম্পর্কে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, বাজেট-ঘাটতি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে উন্নয়ন বাজেট সমন্বয় করতে হবে। সরকারি কর্মচারীদের বহু ধরনের দাবি-দাওয়া মেটাতে গিয়ে বেতন-ভাতা বাড়ানোর বিষয় আছে। মহার্ঘ ভাতার বিষয় আছে। তাই রাজস্ব খাতে ব্যয় কমিয়ে রাখা খুবই কঠিন। কাজেই সবকিছু আমাদের (উন্নয়ন বাজেট) ওপর এসে পড়ে। উন্নয়ন বাজেট কমাতে হবে।

মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার কাজটি সরকারের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জ। কোনো জিনিসের দাম একবার বাড়লে সেটি কমানো কঠিন। তবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে আমাদের রেমিট্যান্স বেড়েছে এবং বৈদেশিক লেনদেনে ভারসাম্য এসেছে। কিন্তু মূল্যস্ফীতির জায়গায় এখনো তেমন পরিবর্তন আসেনি।

এলএনজি আমদানি কমিয়ে দেশীয় গ্যাস সন্ধানে নজর দেওয়া হবে জানিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, ভোলা, সিলেটে অনেক গাস মজুত আছে। জরিপ করলে গ্যাস মিলবে। নিজেদের গ্যাস আছে এগুলো অনুসন্ধান করা উচিত। আমদানি না করে গ্যাস অনুসন্ধান বাড়ানো হবে। গ্যাস  নিয়ে অবহেলা ছিল। সেজন্য বেশি ঝুঁকিতে পড়তে হয়েছে। গ্যাস আমদানি নির্ভরতা কমানো হবে। সিলেট ও মৌলভীবাজার অঞ্চলে প্রচুর গ্যাস মজুত আছে। আগের সরকার এগুলোতে গুরুত্ব না দিয়ে এলএনজি ও কয়লা আমদানি বাড়িয়েছিল। তবে বর্তমান সরকার আন্তর্জাতিক নিয়ম নীতি মেনেই গ্যাস অনুসন্ধান এবং কূপ খননের কাজ করবে। এ কাজ অব্যাহত রাখা হবে।

ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, এরই মধ্যে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে ডিও লেটার দিয়ে বলেছি যে, বিভিন্ন এলাকার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে প্রস্তাব পাঠাতে। কেননা, এখন স্থানীয় পর্যায়ে সংসদ সদস্য নেই। আছেন শুধু আমলারা, আর উপদেষ্টারা। তাই উপদেষ্টারা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। রাস্তাঘাট কোথায় কী সংস্কার দরকার, সেসব সমাধান করা হবে।

তিনি জানান, বৈঠকে যাচাই-বাছাই শেষে অনুমোদিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক’ প্রকল্পটি বাতিল করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক প্রকল্পটি বাতিল করা সহজ ছিল না। তবে সরকার অহেতুক প্রকল্প বাতিলের কাজ করছে। বাজেট ঘাটতি সহনীয় রেখে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) সংশোধনের কাজও চলছে। এতে উন্নয়ন বাজেটের আকার ছোট হলেও প্রবৃদ্ধি কমবে না। সরকারের লক্ষ্য হলো কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং জনগণের উপকার করা। মৌলভীবাজারের সংরক্ষিত লাঠিটিলা বনাঞ্চলের ৫ হাজার ৬৩১ একর জমিতে প্রকল্পটি  নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এটি পরিবেশের জন্য মোটেও ভালো ছিল না।

ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, প্রতিটি দেশে কিছু বনাঞ্চল থাকা উচিত, যেগুলো পরিবেশের জন্য স্পর্শকাতর এবং সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। বনের ওই জায়গাটি আগে থেকেই সংরক্ষিত ছিল, সেখানে সাফারি পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা কেন এল, এটি একটি চিন্তার বিষয়। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত প্রকল্পটি গত বছরের নভেম্বরে একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি বিবেচনায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এই প্রকল্পটি বাতিলের সুপারিশ করে।

একনেক বৈঠকে ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ৯৭৪ কোটি টাকা। এ ব্যয়ে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩৩১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। প্রকল্পগুলোতে বিদেশি ঋণ নেই। এছাড়া ৬টি প্রকল্প  একনেক সভাকে অবহিত করার জন্য উপস্থাপন করা হয় । অবহিত করা ৬ প্রকল্প উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে আগেই অনুমোদন দেওয়া হয়। ৫০ কোটি টাকার কম ব্যয়ের প্রকল্প মন্ত্রণালয় থেকেই অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে একনেক সভাকে অবহিত করার বিধান রয়েছে।

আর্কাইভ