প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪, ০১:১৫ এএম
সরকারের তিন সংস্থার সমন্বয়ে ১০টি যৌথ টিম দেশের আলোচিত ১০টি শিল্প গ্রুপের বিদেশে পাচার করা অর্থের অনুসন্ধান ও তা ফেরাতে কাজ করছে। সরকারি তিন সংস্থা হচ্ছে- দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এই তিন সংস্থার কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত টিম ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। তাদের আইনি সহায়তা দিচ্ছে অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস।
যৌথ টিমের অনুসন্ধানের তালিকায় আছে বেক্সিমকো, এস আলম, বসুন্ধরা, ওরিয়ন, নাসা, জেমকম, নাবিল, সামিট, শিকদার ও আরামিট গ্রুপ। এছাড়া এ তালিকায় আছে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের নাম।
সূত্র জানায়, এসব গ্রুপ ও ব্যক্তিদের নামে ব্যাংক থেকে বেআইনিভাবে ঋণ নেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। একইসঙ্গে আছে সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্যও। তারা অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। সরকারি খাতের রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন। অর্থ পাচারের দায়ে সন্দেহভাজন হিসাবে চিহ্নিত হয়েছেন।
টিম সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী ওইসব গ্রুপ ও ব্যক্তির বিষয়ে তদন্ত চলছে। এর বাইরে তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের নামেও তদন্ত হবে। এসব তদন্তের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করবেন টিমের প্রধান। অনুসন্ধানের আওতায় আনা প্রভাবশালী বেশির ভাগের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ইতোমধ্যে ফ্রিজ করেছে বিএফআইইউ। তাদের বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রাথমিক তদন্তও সম্পন্ন হয়েছে। এতে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বেআইনি ব্যাংক লেনদেনের তথ্য মিলেছে।
জানা গেছে, এর আওতায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনের যাদের বিষয়ে তদন্ত করা হবে, প্রাথমিকভাবে তার একটি তালিকা করা হয়েছে। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, ছেলে রেজওয়ান সিদ্দিক ববি, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শেখ ফজলে নূর তাপস, শেখ ফজলে ফাহিম, শেখ হেলাল, শেখ তন্ময়, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এবং তাদের পরিবারের সদস্য, স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে তদন্ত করা হবে।
অনুসন্ধানের আওতায় থাকা তালিকায় রয়েছে ব্যাংক দখল, ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ পাচারের ঘটনা। এসব ব্যক্তি ও ব্যবসায়ী গ্রুপের সম্পদের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ, ঋণের ব্যবহার, অর্থের গতিপথ, তাদের ব্যবসায়িক ও অন্যান্য লেনদেন, ঋণের সুবিধাভোগীসহ বিভিন্ন বিষয়ে অনুসন্ধান চালানো হবে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে তাদের বিষয়ে তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর আলোকে কিছু তথ্যও ইতোমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে তদন্তও শুরু হয়ে গেছে।