প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২৪, ০১:১৭ পিএম
আওয়ামী লীগ আমলে বঞ্চিত দাবি করে আবেদন করা ১ হাজার ৫৪০ জনের মধ্যে ৭৬৪ জনকে উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতির সুপারিশ করেছে সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খানের নেতৃত্বাধীন পদোন্নতিবঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা কমিটি-২০২৪।
মঙ্গলবার সকালে কমিটির পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে সুপারিশ জমা দেওয়া হয়েছে। জমা পড়া আবেদনের মধ্যে ১৩টি আবেদন কমিটির এখতিয়ার বহির্ভূত হওয়ায় বিবেচনায় নেওয়া হয়নি বলে কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
কমিটির সুপারিশে, `সচিব পদে ১১৯ জন, গ্রেড-১ (সচিব মর্যাদা) পদে ৪১ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ৫২৮ জন, যুগ্মসচিব পদে ৭২ জন এবং উপসচিব পদে ৪ জন কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি প্রদান করা যেতে পারে,` বলে কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
কমিটিতে কাজ করা একটি দায়িত্বশীল সূত্র ডেইলি স্টারকে জানিয়েছে, `কমিটির পক্ষ থেকে শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়েছে। এসব কর্মকর্তাকে প্রশাসনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মাধ্যমে পদায়ন করা হবে কিনা তা নিয়ে এ কমিটি কোনো সুপারিশ করেনি।`
সংশ্লিষ্ট অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, `আবেদনকারী কর্মকর্তাদের অনেকেই পদোন্নতি পেয়ে কাজ করার জন্য চুক্তিভিত্তিক পদায়ন পেতে উন্মুখ হয়ে আছেন। এ বিষয়ে সুপারিশ করার এখতিয়ার আমাদের কমিটির ছিল না। তাই আমরা শুধু ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির সুপারিশ করেছি। এটা বাস্তবায়ন করতে সরকার বাধ্য নয়। এর মধ্যে সরকার যাদের ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দিতে চান দিতে পারেন। চাইলে কাউকে কাউকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগও দিতে পারেন। এটা সম্পূর্ণ সরকারের এখতিয়ার।`
পদোন্নতির জন্য সুপারিশকৃত ৭৬৪ জনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, কমিটি ৯ জন কর্মকর্তাকে ৪ ধাপ, ৩৪ জন কর্মকর্তাকে ৩ ধাপ, ১২৬ জন কর্মকর্তাকে ২ ধাপ এবং ৫৯৫ জন কর্মকর্তাকে ১ ধাপ পদোন্নতির সুপারিশ করেছে। ৭৬৩ জন কর্মকর্তাকে কমিটি পদোন্নতির সুপারিশ করেনি। তাদেরকে কেন পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়নি প্রতিটি ক্ষেত্রে তার সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত সময়কালে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে দেয়। এতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থবিভাগ এবং আইন ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধি ছিলেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, `কমিটির কাছে মৃত্যুবরণকারী কর্মকর্তাদের পক্ষে তাদের পরিবারের সদস্যদের করা ১৯টি আবেদনসহ মোট ১৫৪০টি আবেদন জমা পড়েছিল। প্রাপ্ত আবেদনগুলোর মধ্যে ১৩টি আবেদন বিভিন্ন কারণে কমিটির আওতাবহির্ভূত ছিল। ফলে কমিটি কর্তৃক পর্যালোচনাযোগ্য আবেদন ছিল ১৫২৭টি।
`এসব আবেদন যাচাই-বাছাই করার জন্য কমিটি মোট ২৮টি সভা করে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে সুপারিশ প্রণয়ন করেছে,` বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
কমিটি নির্ধারিত ৯০ দিনের আগেই প্রতিবেদন পেশ করায় কমিটির সদস্যদের প্রধান উপদেষ্টা ধন্যবাদ জানান। প্রতিবেদনটি পেশ করার সময় প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম. সিরাজ উদ্দিন মিয়া উপস্থিত ছিলেন বলে প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় জানিয়েছে।