প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২৪, ০৪:২৪ পিএম
অন্তর্বীতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বৈমষ্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদের দুই ভাই। এ সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে তারা বেশ কিছু চাওয়া-পাওয়ার কথা তুলে ধরেছেন। আশ্বাস মিলেছে প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকেও।
বুধবার (৬ নভেম্বর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তারা।
পরে শহীদ আবু সাঈদের ভাইয়েরা বলেন, প্রধান উপদেষ্টার জন্য বাবা-মায়ের কাছ থেকে "সালাম" এবং শুভ কামনার বার্তা নিয়ে এসেছিলাম।
গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রফেসর ইউনূস তার ঐতিহাসিক ভাষণে আবু সাঈদ ও অন্যান্য শহীদদের আত্মত্যাগের কথা যখন বলছিলেন তখন আবু সাঈদের পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়েন বলে জানান তার ভাইয়েরা।
অধ্যাপক ইউনূসকে আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বলেন, ‘বিপ্লবে তার বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা আপনি তুলে ধরেছেন এবং প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার একদিন পরই রংপুরে আমাদের গ্রামে আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন এতে আমরা সম্মানিত বোধ করেছি।’
প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ড রেজিমেন্ট (পিজিআর) প্রধান উপদেষ্টাকে গার্ড স্যালুট দেয়ার সময় আবু সাঈদের দুই ভাইও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
আরেক ভাই আবু হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সাথে যখন আমরা মঞ্চে দাঁড়িয়েছিলাম এবং সৈন্যরা আমাদেরকে গার্ড স্যালুট দিয়ে সম্মান জানান, তখন আমাদের কেমন লেগেছিল, তা আমি বলতে পারব না।
বৈঠকে আবু সাঈদ হত্যা মামলার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করে ভাইয়েরা বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।
ভাইরা বলেন যে, নিহত ভাইয়ের নামে একটি ফাউন্ডেশন স্থাপন করতে চাই। তার স্মরণে গ্রামে একটি "মডেল মসজিদ" এবং একটি মেডিকেল কলেজ তৈরি করতে চাই এবং এ বিষয়ে সহায়তার জন্য দুটি মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
এ ফাউন্ডেশন দরিদ্র এবং জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের শিকারদের জন্য কাজ করবে বলেও জানান আবু হোসেন।
এ সময় অধ্যাপক ইউনূস আবু সাঈদের পরিবারের জন্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশকে তার হত্যার তদন্ত দ্রুত করতে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শহীদ আবু সাঈদ জাতির জন্য যা করেছেন, তা বাংলাদেশ কখনও ভুলবে না। তার আত্মত্যাগ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে বিরাট ভূমিকা রেখেছিল।
আবু সাঈদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের জন্য তার দরজা সবসময় খোলা থাকবে। আমি সবসময় তোমাদের সঙ্গে থাকব। তোমার বাবা-মাকে আমার সালাম জানাবে।
অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার ঠিক একদিন পর গত ৯ আগস্ট রংপুরের উত্তর জেলা বাবনপুর গ্রামে আবু সাঈদের বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করেন।
তিনি শহীদ আবু সাঈদের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করেন। ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ।