প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২৪, ১১:২৫ পিএম
শারদীয় দুর্গোৎসবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার পরও কোনো নিরাপত্তাহীনতার ঘটনা ঘটলে আইনিশৃঙ্খলা বাহিনীকেও বিচারের আওতায় আনা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, “সারা দেশে নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে পুলিশ প্রশাসন। যারা নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন, যদি কোথাও কোনো নিরাপত্তাহীনতার ঘটনা ঘটে তাহলে শুধু অপরাধীদের নয়, এই দায়িত্বশীলদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে।”
বুধবার সন্ধায় ঢাকার রমনা কালী মন্দির পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনের সময় এই সতর্কতা বার্তা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক থেকে উপদেষ্টার চেয়ারে বসা নাহিদ ইসলাম।
সেখানে তিনি বলেন, “দেশে এখন নানাবিধ সমস্যা ও সংকট রয়েছে। তার মধ্যেই এবারের দুর্গোৎসব পালিত হচ্ছে। উৎসব যেন নির্বিঘ্নে পালিত হয় এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকে, সে বিষয়ে আমরা সকলেই সজাগ রয়েছি। “আমাদের দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও বৈষম্যের মধ্যে রয়েছে। তাদের দীর্ঘদিনের যে দাবি-দাওয়া রয়েছে, তা আমরা পূরণের চেষ্টা করছি।”
“নতুন বাংলাদেশে ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে আমরা কোনো বৈষম্য দেখতে চাই না,” বলেন তিনি। রাষ্ট্র সংস্কারের অঙ্গীকার নিয়ে তারুণ্যের প্রতিনিধি হিসেবে উপদেষ্টা হওয়া নাহিদ বলেন, “যে সকল অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, আমরা তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেছি। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল বিচার।
“আমরা যদি বিচারের সংস্কৃতি তৈরি করতে না পারি, তাহলে সমাজ থেকে এ ধরনের অপরাধ বন্ধ করা যাবে না। এ ধরনের ঘটনার মধ্য দিয়ে অনেকেই রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করে, আমরা সে সুযোগটিও তাদেরকে দেব না।”
রমনা কালী মন্দির থেকে বেরিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন নাহিদ ইসলাম। এ সময় দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ উৎসবে সারা দেশে সাম্প্রদায়িক ও সামাজিক শান্তি, ধর্মীয় নৈতিকতা ও মূল্যবোধ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা ব্যাক্ত করেন।
“আমরা একটা লড়াইয়ের মাধ্যমে এই পরিস্থিতিতে এসেছি। আমরা একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি, মানুষের অনেক প্রত্যাশা আছে। মানুষই যে যার যার জায়গা থেকে সহযোগিতা করছে। এ সহযোগিতা যতদিন থাকবে, আমাদের ঐক্য-বন্ধন যত বেশি থাকবে; আমরা সামনের সমস্যাগুলো তত মোকাবেলা করতে পারব। “বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছি। এই আন্দোলনে জগন্নাথ হলের অনেক শিক্ষার্থী মিলে আমরা লড়াই করেছি। অনেক শিক্ষকও আমাদেরকে সহায়তা করেছেন।”
বাংলাদেশকে নতুন করে গঠন করতে হলে সেভাবেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যেতে হবে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমরা চাই বাংলাদেশ এমন একটা জায়গায় যাক যেখানে সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু বলে পরিচয় দেওয়ার প্রয়োজন হবে না।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সাইমা হক বিদিশা সকলকে শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “জগন্নাথ হলের সর্বজনীন দুর্গা পূজায় আমি বহু বছর ধরেই আসি। আমার অনেক ভালো লাগছে যে, ছাত্র-জনতার বিপ্লবোত্তর নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা সবাই একসঙ্গে এগিয়ে যাব; সেটিই আমরা চাই।”
তিনি বলেন, “জাতি, ধর্ম, বর্ণনির্বিশেষে আবহমান বাঙালির অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিফলিত হচ্ছে আজকের এই দুর্গা উৎসবে। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে আসে, তাদেরকে অভ্যর্থনা জানাতে পেরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার আনন্দিত।”