প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৪, ০৯:৫২ পিএম
পিরোজপুর-১ (নাজিরপুর, পিরোজপুর সদর ও ইন্দুরকানী) আসনের সাবেক এমপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার পুত্র মাসুদ সাঈদী। তিনি বলেন, সুস্থ বাবাকে হাসপাতালে এনে হত্যা করা হয়েছে। তখন আমার বাবার সঙ্গে একটু দেখা করার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাসপাতালে চেষ্টা করেছি। এছাড়া দিনের পর দিন অপেক্ষা করেছি, দরজায় দরজায় কেঁদেছি কিন্তু ওই খুনি হাসিনা একটিবারের জন্যও আমাকে বাবার সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি।
শুক্রবার পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শাঁখারীকাঠী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সমাবেশে মাসুদ সাঈদী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশে গত ১৭টি বছর অত্যাচার, জুলুম, স্ট্রিম রোলার চালিয়েছিল আওয়ামী লীগ। আমরা এ প্রত্যেকটি জুলুম ও হত্যার বিচার চাই। আমরা কাউকে ক্ষমা করি নাই। তবে যারা পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে ব্যক্তিগত সম্পদ রক্ষা, ব্যবসা বাণিজ্য ও চাকরি বাঁচানোর কারণে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে চলতে বাধ্য হয়েছেন তাদের সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছে; কিন্তু যারা ফাঁসির দড়ি নিয়ে মিছিল করেছেন তাদের ক্ষমা নাই।
মাসুদ সাঈদী বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাসই হত্যার ইতিহাস। শেখ মুজিব ১৯৬৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদের স্পিকার শাহেদ আলীকে সংসদে চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছিলেন। ২০১০ সালে ক্ষমতায় এসে ২০ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সেনাবাহিনীর ৫৭ জনকে তারা হত্যা করেছিল, যা একটি যুদ্ধেও এতসংখ্যক অফিসার শহিদ হয়নি। ২০১৩ সালে তথাকথিত ওই ক্যাঙ্গারু ট্রাইব্যুনাল থেকে আল্লামা সাঈদীর মিথ্যা মামলার রায় দিয়েছিল, সেই প্রতিবাদে যখন সারা বাংলাদেশ ফুঁসে উঠেছিল তখন শেখ হাসিনার নির্দেশে গুলি করে ৩শ মানুষকে হত্যা করেছে। ৫ মে শাপলা চত্বরে এই দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান আলেম সমাজ একত্রিত হয়েছিলেন নাস্তিকদের বিচারের দাবিতে; তখন ভারতের প্রেসক্রিপশনে খুনি হাসিনা রাতের আঁধারে হাজার হাজার আলেমকে গুলি করে হত্যা করেছিল। শেখ হাসিনার হাত হাজারও-লাখো মানুষের রক্তে রঞ্জিত।
শাঁখারীকাঠী ইউনিয়ন সভাপতি মো. আনিসুর রাহমান মল্লিকের সভাপতিত্বে ও মাওলানা আবু দাউদের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পিরোজপুর জেলা আমির অধ্যক্ষ তোফাজ্জাল হোসেন ফরিদ, পিরোজপুর জেলা নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রব, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ জহিরুল হক, জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট আবু সাঈদ মোল্লা, উপজেলা জামায়াতের আমির আব্দুর রাজ্জাক, সেক্রেটারি কাজী মোসলেউদ্দীন, উপজেলা ছাত্রশিবির সভাপতি মো. আবু হানিফ শেখ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে গত সাড়ে ১৫ বছরে জামায়াতের উদ্যোগে এই এলাকায় প্রকাশ্যে কোনো সমাবেশ হয়নি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই প্রথম সাবেক এমপি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পুত্র ও ইন্দুরকানী (জিয়ানগর) উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী নাজিরপুরে সফরে এসে বক্তব্য দিলেন।