প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২৪, ০৭:৩২ পিএম
স্বামী হত্যার অভিযোগ এনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৫৫ জনের নামে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের বাসন থানায় মামলা দায়ের করেছেন এক গৃহবধূ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময় গত ২০ জুলাই নজরুল ইসলাম (৩২) নিহতের ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মোছা. পূর্ণিমা বেগম বাদী হয়ে বুধবার এ মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বাসন থানার ওসি মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি, রুমানা আলী টুসি, জাহিদ আহসান রাসেল, মেহের আফরোজ চুমকি, সাবেক এমপি আখতার উজ্জামান, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, সাধারণ সম্পাদক আতাউল্যাহ মণ্ডল, আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান মতি, আসাদুর রহমান কিরণ, আফজাল হোসেন সরকার রিপনসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সিটি করপোরেশনের কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে আসামি করা হয়েছে।
নিহত নজরুল ইসলাম (৩২) সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ থানার বারইভাগ এলাকার মো. জামাল শেখের ছেলে। তিনি গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানার চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার শাহাবুদ্দিন মণ্ডলের বাসায় ভাড়া থাকতেন।
এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগদানের উদ্দেশ্যে গত ২০ জুলাই বেলা ১২টার দিকে তার স্বামী নজরুল ইসলাম ঢাকা-ময়মনসিংহগামী মহাসড়কের পূর্বপাশে বাসন থানাধীন চান্দনা এলাকায় পশমী সোয়েটার গার্মেন্টসের পাকা রাস্তার উপর এসে সমাবেশে অংশগ্রহণ করে। সেখানে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ চলাকালে মামলার প্রথম ১৬ জন আসামির নির্দেশে দুর্বৃত্তরা তাদের সঙ্গে থাকা বন্দুক, পিস্তল, লাঠি, লোহার রড, রামদা, ছেন, চাপাতি, কোবাসহ মারাত্মক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর অতর্কিতভাবে হামলা করে। তারা হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যুপরি কিলঘুসি মেরে, লাঠি ও লোহার রড দিয়ে আঘাত করে এলোপাতাড়ি মারধর এবং ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে একাধিক আন্দোলনকারীদের রক্তাক্ত জখম করে। অজ্ঞাত বিবাদীরা ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়িভাবে গুলি ছুড়িতে থাকে। ওই সময় নজরুল ইসলাম তার পিঠের ডান পাশে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন।
বাদী স্বামীর লাশ নিয়ে শ্বশুরবাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ থানাধীন বারইবাগ গ্রামে দাফন সম্পন্ন করেন। স্বামীর মৃত্যুতে তার পরিবারের লোকজন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হওয়ায় এবং বর্তমানে দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি অস্বাভাবিক থাকায় উক্ত আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে থানায় এসে এজাহার দায়ের করতে বিলম্ব হয়।