প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৪, ০৭:০২ পিএম
বাংলাদেশে চলমান ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সামলে ওঠার আগেই ভারতের বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বন্যার জেরে ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেট খুলে দিয়েছে ভারত। আজ সোমবার (২৬ আগস্ট) গেটগুলো খুলে দেওয়া হয়। এতে বাংলাদেশে ঢুকবে এক দিনে ১১ লাখ কিউসেক পানি।
বাঁধের ১০৯টি গেট খুলে দেওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদসহ বাংলাদেশেও বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
তবে ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি ও পাহাড়ি ঢলের বিষয়ে আগে থেকে বাংলাদেশকে তথ্য দেওয়া হচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মো. ময়েজ উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গতকাল রবিবার পর্যন্ত ফারাক্কার ২৭টি গেট খোলা ছিল। আজ সোমবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখলাম মোট ১০৯টি গেট খোলা হয়েছে। এভাবে হঠাৎ এতগুলো গেট খুলে দিলে এ অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।’
গেটগুলো খুলে দেওয়ায় দেশের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জসহ আশপাশের জেলাগুলো প্লাবিত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে নদ-নদী বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিভারাইন পিপলের পরিচালক এম আনোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ফারাক্কার গেট খুলে দেওয়ার খবরটি আমাদের জন্য বিপজ্জনক। এর ফলে দেশের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জসহ আশপাশের জেলাগুলো প্লাবিত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে ফারাক্কা বাঁধের জেনারেল ম্যানেজার আর দেশ পাণ্ডে বলেন, ‘ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ সব সময় অ্যালার্ট রয়েছে।
প্রতিমুহূর্তে নজর রাখা হচ্ছে। খুব কম সময়ের মধ্যে যেভাবে পানির চাপ তৈরি হয়েছে, তাতে ১০৯ গেটের সব কটি খুলে না দিল ব্যারাজের ওপর বড় চাপ তৈরি হচ্ছিল। এর ফলে বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারত।’
তিনি আরো বলেন, ‘আপাতত ফিডার ক্যানেলে ৪০ হাজার কিউসেক ও ডাউন স্ট্রিমে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।’
এদিকে আজ সোমবার বাঁধ কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিবেশী দুই রাজ্যে বন্যার জেরে পানির চাপ পড়েছে।
তবে স্বস্তির বিষয়, এখনো নেপাল থেকে পাহাড়ি ঢল নামেনি। ফারাক্কা বাঁধ এলাকায় পানি বিপৎসীমার ৭৭.৩৪ মিটার ওপর দিয়ে প্রভাবিত হতে থাকায় বাধ্য হয়ে গেট খুলতে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ফিডার ক্যানেলেও পানির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।
আজ সোমবার সকাল ১১টার দিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বন্যা পরিস্থিতির সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়, দেশে চলমান বন্যায় ১১ জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৫ লাখেরও বেশি মানুষ। গতকাল রবিবার মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২০ আর ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা ছিল ৫২ লাখ।