• ঢাকা সোমবার
    ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

এস আলমের ব্যাংকগুলোকে আর কোনো তারল্য সহায়তা নয় : গভর্নর

প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২৪, ০৬:৫৫ পিএম

এস আলমের ব্যাংকগুলোকে আর কোনো তারল্য সহায়তা নয় : গভর্নর

সিটি নিউজ ডেস্ক

এস আলমের ইসলামী ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকগুলোকে বেআইনিভাবে তারল্য সুবিধা দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বোর্ডে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় ডেপুটি গভর্নর ড. হাবিবুর, নুরুন নাহারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

গভর্নর বলেন, আমরা অনিয়মে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব, কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না। দুর্বল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বিষয়ে তিনি বলেন, পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

মূল্যস্ফীতি নিয়ে তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি ৬/৭ মাসের মধ্যে কমে আসবে। মুদ্রানীতি খুব পরিবর্তন না হলেও একটু টাইট করা হবে। মুদ্রাবাজার একটু ভালো অবস্থানে আছে। ডলার ১২৫ টাকায় গেলেও এখন কমে এসেছে। তিনি আরও বলেন, ইসলামী ব্যাংকগুলোর বিষয়ে একটু সময় নিচ্ছি যাতে সিদ্ধান্তটি টেকসই হয়। আমরা যাই করি না কেন যারা দোষী তাদের টার্গেট করব, প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট নয়। আমরা কোনো প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে পদক্ষেপ নেব না তবে ব্যক্তির ক্ষেত্রেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কারণ প্রতিষ্ঠানে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে, অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়বে।

নন-পারফর্মিং লোন (এনপিএল) নিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে যেতে চাই। ব্যবসায়ীরা এটা করতে একটু সময় চেয়েছে, তাদের দাবি যার ফলে প্রভাব পড়বে আমদানি-রপ্তানিতে। আমরা বলেছি এটা নিয়ে আইএমএফ-এর সাথে আলোচনা করব, তবে আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে যাব এতে সন্দেহ নেই। সরকারি ব্যাংকের অস্থিরতা নিয়ে বলেন, রাষ্ট্রীয় সোনালী ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের অস্থিরতা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা এস আলমের গুলোয় দেখেছি কিন্তু সরকারি ব্যাংকের সেটা দেখা সত্যি দুর্ভাগ্যজনক।

এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইসলামী ব্যাংক ছাড়া ৫ ব্যাংকে ডিপোজিট উঠে যাচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, এস আলমের নিয়ন্ত্রণে আছে একাধিক ব্যাংক। সেখানে ডিপোজিট রাখা এবং তোলা গ্রাহকের ব্যক্তিগত বিষয়। গ্রাহকরা নিরাপদ না মনে করলে আমানত উঠাবে। এখন আমানত উঠিয়ে নিচ্ছেন আমানতকারীরা যার দায় নিতে হবে ব্যাংক মালিকদের।

তিনি বলেন, আমরা আর কেন সাপোর্ট (তারল্য) দিচ্ছি না। ডিপোজিটরা যদি কোন ব্যাংকের ওপরে আস্থা না রাখে, সেসব ব্যাংক চলতে পারে না। সব সময় বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের উদ্ধার করা ঠিক হবে না। আবার হঠাৎ করে কোনো প্রতিষ্ঠন (ব্যাংক) বন্ধ করা বা টাকা দিয়ে তড়িঘড়ি করে উদ্ধার করাও ঠিক হবে না। পরে সময়ের প্রয়োজনে হয়তো সংখ্যা কমিয়ে আনার চেষ্টা করব বা একীভূত করব।

সম্প্রতি ব্যাংকে গুলির ঘটনায় ব্যাংকের কর্মকর্তা আহত ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, ব্যাংকের অস্থিরতা এক দিনেই হয়নি সার্বিক বিষয় নিয়ে কাজ করছি এখন আমরা।

ব্যাংক কমিশনের বিষয়ে বলেন, এ নিয়ে অল্প দিনে ঘোষণা আসতে পারে। ডেপুটি গভর্নর নিয়োগের কমিটি হয়েছে, সার্চ কমিটি আছে।

গভর্নর বলেন, করপোরেট খাত ডলার লাগবে বলে সেন্ট্রাল ব্যাংকে আসে। আমরা এটা নিয়ে কাজ করব, আমরা ডলার নিয়ে বাজারমুখিতা করার চেষ্টা করছি। আমাদের লক্ষ্য কেউ যেনো সরকারের কাছে না আসে। আমাদের রিজার্ভের থেকে নির্ভরতা কমাতে কাজ করবো, এটা জিরোতে নামিয়ে আনতে পারলে ভালো।

ব্যবসায়ীদের ঋণে কিস্তি সুবিধা বিষয়ে গভর্নর বলেন, ঋণের কিস্তি সুবিধা চেয়েছে ব্যবসায়ীরা। যদি ১০ থেকে ২০ প্রতিষ্ঠান আন্দোলনের কারণে খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে বিবেচনায় নিতে পারি। এ নিয়ে আমরা কিছু করতেও পারি। তবে ছোট ও মাঝারির ক্ষেত্রে এ সুবিধা হতে পারে, কোনো বড় প্রতিষ্ঠান পাবে না।

দুর্বল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে আমাদের বিবেচনায় আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক হাজার টাকার নোট বাতিলের পরিকল্পনা নেই। এটা নিয়ে গুজব যেন না হয়। তবে সরকারের নতুন নোট প্রয়োজন হলে ছাপানো হবে।

আর্কাইভ