• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

মেট্রোরেল যেকোনো সময় চালু সম্ভব, দরকার সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২৪, ০৯:০১ পিএম

মেট্রোরেল যেকোনো সময় চালু সম্ভব, দরকার সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় রাজধানী ঢাকার জনপ্রিয় গণপরিবহন মেট্রোরেলের কোচ, লাইন ও সংকেত ব্যবস্থার কোনো ক্ষতি হয়নি। মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের টিকিট বিক্রি ও যাত্রীদের ভাড়া আদায়সংক্রান্ত ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই দুটি স্টেশন বাদ দিয়ে বাকি ১৪টি স্টেশনের মধ্যে মেট্রোরেল যেকোনো সময় চালু করা সম্ভব।

ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। সংস্থাটির সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন ছাড়া বাকি স্টেশনে যাত্রী ওঠানামা, টিকিট বিক্রি কিংবা স্বয়ংক্রিয় ভাড়া কেটে রাখার ব্যবস্থা পুরোপুরি অক্ষত আছে। ফলে চাইলে যেকোনো সময় উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু করা সম্ভব। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, নতুন সরকারে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কোনো উপদেষ্টাকে দেওয়া হয়নি। তারা উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্ত পেলেই মেট্রোরেল চালু করবে। আগামীকাল রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অফিস করলে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব এই বিষয়ে নির্দেশনা চাইতে পারেন।

ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, মেট্রোরেলর সব ব্যবস্থাই সচল আছে। তবে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলে এর সব ব্যবস্থা ঠিক আছে কি না, তা দেখার জন্য পরীক্ষামূলক চালানোর আন্তর্জাতিক রীতি আছে। সে ক্ষেত্রে উচ্চপর্যায়ের অনুমতি পেলে পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হবে। তবে পরীক্ষামূলক চলাচল এক দিন না আরও বেশি করা হবে, তা নির্ভর করছে ডিএমটিসিএলের কারিগরি দলের ওপর।

গত ১৮ জুলাই মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে পুলিশ বক্সে অগ্নিসংযোগ করা হলে ওই দিন বিকেল ৫টায় মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এর পরদিন মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর করা হয়। ২০ জুলাই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক। মিরপুর ১০ স্টেশন ঘুরে দেখে ওই দিন গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফিংয়ের সময় তিনি বলেন, ‘‌ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশন দুটি মেরামত করে পুনরায় চালু করতে এক বছরের মতো সময় লাগতে পারে।’

২৭ জুলাই তখনকার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অবশ্য সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর ১০ স্টেশন ধ্বংসপ্রাপ্ত। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এটা এক বছরেও যন্ত্রপাতি এনে সচল করা সম্ভব হবে না।’


মতিঝিল থেকে মেট্রোরেলের সর্বশেষ ট্রেন ছাড়ে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে। আর উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিলের পথে সর্বশেষ ট্রেন ছাড়ে রাত ৯টায়। সারা দিনে প্রায় ২০০ বারের মতো মেট্রোরেল চলাচল করে। যাত্রী যাতায়াত করে তিন লাখের মতো।

মেট্রোরেলের ক্ষয়ক্ষতি ও কবে চালু করা হবে জানার জন্য আজ বিকেল থেকে একাধিকবার ফোন করলেও ধরেননি ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন ছিদ্দিক।

মেট্রোরেলের পুরো চলাচল নিয়ন্ত্রণ হয় কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে। সেটি উত্তরার ডিপোতে অবস্থিত। ফলে সংকেত বা যোগাযোগের ক্ষেত্রে সমস্যা নেই। আর মূল অবকাঠামোর যদি ক্ষতি না হয়ে থাকে, তাহলে মেট্রোরেল চালু করা কোনো সমস্যা নয়।
অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘কাল রোববার বিষয়টি নিয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। এরপরই মেট্রোরেল চালুর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’

আর্কাইভ