প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২৪, ১২:৩১ এএম
কোটা সংস্কার আন্দোলন ইস্যুতে রাজধানীর মিরপুরের ১০ নম্বর ও কাজীপাড়ায় মেট্রোরেল স্টেশনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ছাত্রদলের নেতাসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার ক্রাইম দক্ষিণ ইউনিট।
ডিবি বলছে, পরিকল্পিতভাবে মিরপুরে মেট্রোরেল স্টেশনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এই হামলায় এক থেকে দেড় হাজার মানুষ অংশ নেয়।
ডিবির তথ্যানুযায়ী, হামলায় সমন্বয় করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আবু হান্নান তালুকদার। হামলার নেতৃত্ব দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইমাম আল নাসের (মিশুক)।
একই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক বজলুল রহমান (বিজয়) ও ছাত্রদলের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি মো. ফেরদৌসকে (রুবেল)।
রোববার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
হারুন বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীরা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলা ও ভাঙচুর করায়। বিশেষ করে আমাদের স্বপ্নের মেট্রোরেলে যারা আগুন লাগিয়েছে, সেতু ভবনে আগুন লাগিয়েছে, পুলিশ সদস্যদের ওপর যারা হামলা চালিয়েছে ও হত্যা করেছে, আমরা তাদের যেখানেই থাকুক একে একে সবাইকে গ্রেফতার করব।
হারুন দাবি করেন, মেট্রো স্টেশনে হামলার মাস্টারমাইন্ড ও নেতৃত্বদাতা ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা আবু হান্নান। হান্নান তার সহযোগীদের নিয়ে বিএনপি নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাইফুল ইসলাম নিরবের নির্দেশনায় মেট্রো স্টেশনে আগুন দেয়।
এই ঘটনায় আরও দুই নেতার নাম প্রকাশ করেছে তারা। যাদের মধ্যে বিএনপি নেতা শ্রাবন আগেই গ্রেফতার হয়েছেন। বিএনপির নেতারা চার-পাঁচজনকে দায়িত্ব দেয়। মেট্রো স্টেশনে আগুন দিয়ে ধ্বংস করার নির্দেশনা দেওয়া হয়, সাধারণ মানুষ যেন মেট্রোতে আর চলাচল করতে না পারে।
তিনি আরও বলেন, মেট্রোরেল স্টেশনে আগুন ও দায়িত্বরত পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় অনেকের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে এই ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে ডিবি অভিযান চালাচ্ছে।
অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, আপনারা জানেন গাজীপুরের সাবেক মেয়রের সহকারীকে মেরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। একজন পথচারীকে পুলিশ ভেবে মেরে দেড় কিলোমিটার টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এমন বর্বোরোচিত হামলা ও হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। জড়িতরা বাংলাদেশের উন্নয়নের পক্ষের কোনো লোক না। তারা দেশকে অকার্যকর করতে অপচেষ্টা চালিয়েছে। অনেকে মনে করছে ঢাকা ছেড়ে পালিয়ে বেঁচে যাবে। সেটা হবে না। মামলা হয়েছে। ডিবি তদন্ত করছে। আমরা জড়িত কাউকে ছাড় দেব না।
এক প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলনকে ঘিরে নাশকতার পরিকল্পনা ছিল। এই আন্দোলনকে ঘিরে তারা রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করে, এই সব কিছুই পরিকল্পিত। এই ঘটনায় ইন্ধনদাতা, অস্ত্রদাতাদেরও গ্রেফতার করা হবে।