প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৪, ০২:৪০ পিএম
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, শিক্ষার্থীরা না বুঝেই কোটা নিয়ে আন্দোলন করছে। তারা মামলা তোলার যতই আলটিমেটাম দিক, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে। এ আন্দোলনে উসকানিদাতা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের ভুল পথে পরিচালিত করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবারের ঘটনায় যে মামলা হয়েছে, তদন্তের পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
রোববার (১৪ জুলাই) ঢাকার শিল্পকলা একাডেমিতে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রয়ণ অধিদফতর আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা (শিক্ষার্থীরা) মামলা তোলার যতই আল্টিমেটাম দিক, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে। মেরিট দেখেই মামলা করা হয়েছে। তদন্তের আগে বোঝা যাবে না তাদেরকে কে উসকানি দিচ্ছে। আন্দোলনে উসকানিদাতা রয়েছে। শিক্ষার্থীরা যা করছে,তা না বুঝেই করছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকদ্রব্য সারা বিশ্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের দেশে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। আমরা মাদক উৎপাদন করি না। কিন্তু ভৌগলিক কারণে এর প্রভাব আমরা মোকাবিলা করে আসছি। মাদকদ্রব্য বর্জন নিয়ে যদি আমরা কাজ না করি, তাহলে এর ব্যাপ্তি আরও ছড়াবে।
কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেমন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কাজ করছেন, তেমনি মাদকের বিরুদ্ধেও জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। দেশের জেলখানায় থাকা আসামিদের একটি বিরাট অংশ মাদক আসক্ত, যারা বিভিন্ন অপকর্ম করে জেল খাটছেন বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
মাদকের থাবা থেকে আসক্তদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে বেশকিছু নিরাময় কেন্দ্রে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে- এ কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমাদের সন্তানেরা কী করে তা আমাদের অবিভাবকদের খেয়াল রাখা উচিত। মাদকাসক্তদের পুনর্বাসনের জন্য জাতীয় গাইড লাইন প্রণয়ন করা হয়েছে। আমরা চাই আসক্তদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,সীমান্ত দিয়ে মাদক সরবরাহ রোধে র্যাব ও বিজিবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি কাজ করছে পাশের দেশগুলো, যেখান থেকে মাদক দেশে প্রবেশ করছে। আমরা সেইসব দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে যোগাযোগ করছি। আমাদের অভিযোগের বিরুদ্ধে তারাও কাজ করছে। ভারত আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছে। মিয়ানমারকে বহুবার অনুরোধ করা হলেও তারা সেটি নিয়ন্ত্রণে নিতে পারছে না। তাদের অভ্যন্তরীণ যুদ্ধ বিগ্রহের কারণে। আমরা আশা করি, তারাও আমাদের সহায়তা করবে। নিয়মিত বৈঠক চলছে।
আমাদের সবাইকে মাদকের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে বলেও জানান তিনি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজির আহমেদ (এমপি) ও সুরক্ষা সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মশিউর রহমান।
প্রসঙ্গত: রাজধানীতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের যানবাহন ভাঙচুর, পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা এবং মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে। শুক্রবার (১২ জুলাই) রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের পরিবহন বিভাগের গাড়িচালক খলিলুর রহমান বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন। মামলায় আসামি হিসেবে ‘অনেক সংখ্যক শিক্ষার্থী’ উল্লেখ করা হয়।