• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
শনিবার ক্রয়সংক্রান্ত কমিটির বৈঠক

পদ্মা সেতু প্রকল্পের নদীশাসন খাতে ব্যয় বাড়ছে আরও ২৫০ কোটি টাকা

প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২৪, ১০:৪৩ পিএম

পদ্মা সেতু প্রকল্পের নদীশাসন খাতে ব্যয় বাড়ছে আরও ২৫০ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পদ্মা সেতু প্রকল্পের নদীশাসন কাজের ব্যয় আরও ২৫০ কোটি টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব শনিবার উঠছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে। 

গত বছর এই সময় ৮৭৭ কোটি টাকা প্রথম দফা ব্যয় বাড়ানো হয়। দুদফা সংশোধিত হওয়ায় নদীশাসন ব্যয়ের চুক্তি মূল্য দাঁড়াবে ভ্যাট ও ট্যাক্সসহ ৯ হাজার ৮৩৪ কোটি ৭৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

শেষ মুহূর্তে ব্যয় বৃদ্ধির পেছনে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নদীশাসনের কাজ বিলম্বিত হওয়াকে কারণ হিসাবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

সেতু বিভাগ সূত্রমতে, নদীশাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন (এসএইচসিএল)। এর প্রথম সংশোধিত চুক্তিমূল্য অনুযায়ী এ কাজে ব্যয় ধরা হয় ৯ হাজার ৫৮৫ কোটি ৩৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। 

পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ রোববার ৩০ জুন শেষ হওয়ার কথা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের ৩০ জুন। তবে প্রকল্পের ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড চলতি ৩০ জুন শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

জানা গেছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসন কাজের মূল চুক্তিমূল্য ছিল আট হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লাখ ৪১ হাজার টাকা। যা ২০১৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে ২০২৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় নদীশাসন কাজের প্রথম সংশোধিত চুক্তিমূল্য ৯ হাজার ৫৮৫ কোটি ৩৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়।

নদীশাসন কাজ বিলম্বিত হওয়ায় অতিরিক্ত সময়ের জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বাড়তি অর্থ দাবি করে চিঠি দেয়। দুটি কারণে সময় বৃদ্ধির দাবি করেছে। প্রথমত, প্রকল্পের জাজিরা প্রান্তে সীমানার প্রায় এক কিলোমিটারের বেশি এলাকা নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখার স্বার্থে বিআইডব্লিউটিএর দখলে থাকায় জমি হস্তান্তরে প্রায় ৩ বছরের বেশি বিলম্ব হয়। দ্বিতীয়ত, ডিজাইন চূড়ান্ত হওয়ার পর মাওয়া প্রান্তে মূল সেতুর উজানে প্রচণ্ড স্রোতে নদী ভেঙে কিছু এলাকা বিলীন হয়ে যায়। এর ফলে নদীর তলদেশের গভীরতা লেভেল দাঁড়ায় (-) ৩৩ মিটার পিডব্লিউডি। নদীশাসন কাজের ডিজাইন অনুযায়ী অ্যাপ্রনের লেভেল (-) ২৫ মিটার পিডব্লিউডি। তলদেশে গভীরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতঃপূর্বে সম্পাদিত ডিজাইন অনুযায়ী কাজ করা সম্ভব হয়নি। ফলে, পরে ডিজাইন প্রণয়নের প্রয়োজন হয়। সৃষ্ট গভীরতা প্রকৃতিগতভাবে ভরাট হতে কয়েকটি বর্ষা মৌসুমের প্রয়োজন হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরিবর্তিত নতুন ডিজাইন প্রণয়নে বিলম্ব হয়।

এর আগে বিলম্বের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত ৬৯০ দিনের অর্থ দাবি করেছে। ভ্যাট ও ট্যাক্স ব্যতীত মোট পাওনা দাঁড়ায় ২৬৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা। পরে নেগোশিয়েশনের মাধ্যমে ১০ শতাংশ কমানোর প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে ঠিকাদার। ফলে, ভ্যাট ও ট্যাক্স ছাড়া চূড়ান্তভাবে দাবি দাঁড়িয়েছে ২৩৭ কোটি ২৫ লাখ ১২ হাজার টাকা। এর সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ট্যাক্সসহ মোট ব্যয় দাঁড়ায় ২৭২ কোটি ৮৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকা।

জানা গেছে, সংশোধিত চুক্তিমূল্যের বিপরীতে সম্পাদিত কাজে মোট ২৩ কোটি ৪১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা সাশ্রয় হয়েছে। এমতাবস্থায় নদীশাসন কাজের সংশোধিত চুক্তিমূল্য দাঁড়াচ্ছে ৯ হাজার ৮৩৪ কোটি ৭৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।

জাতীয় সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ