প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২৪, ০১:৫৬ পিএম
সেন্টমার্টিন যদি বেদখল হয়ে যায়, বাংলাদেশ কোন প্রক্রিয়ায় সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে—এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা আক্রান্ত হলে সেই আক্রমণের জবাব তো আমরা দেব। আমরাও প্রস্তুত।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
কক্সবাজার থেকে সেন্ট মার্টিনে কোনো জাহাজ যেতে পারছে না। মিয়ানমার থেকে গুলি চালানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী কিছু দিন আগে বলেছেন, আমাদের জলসীমায় কোনো একটি রাষ্ট্র ঘাঁটি করতে চাচ্ছে, আমরা চক্রান্তের শিকার হচ্ছি কিনা—গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গাদের যে স্রোত এবং মানবিক আবেদনে প্রধানমন্ত্রী সেদিন উদারভাবে সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন। যে কারণে তাকে মানবতার মা বলে অভিহিত করা হয়।
সে সময় প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে ছিলেন জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, সেখানে তার একটা ছোট অপারেশন হয়। সে সময় প্রতিদিনই তিনি সরকার এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সবাইকে ফোন করতেন। আমাদের পার্টি পর্যায়েও সাবধান করে দিতেন—কোনো অবস্থাতেই যেন আমরা কেউ কোনো উসকানি না দেই। উসকানি দিলে যুদ্ধ হতে পারে, অন্য পক্ষ তো বসে থাকবে না। আমাদের আকাশসীমাও তারা দুএকবার লঙ্ঘন করেছিল। তারপরও আমরা কিন্তু তখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ধৈর্য ধরেছিলাম এবং তখন সে অবস্থাটা আর বেশি দূর এগোয়নি। যদিও রোহিঙ্গা সমস্যাটা আমাদের ওপর জেঁকে বসেছে।
তিনি বলেন, আজকে দুনিয়ার বিভিন্ন সংস্থা, বড় বড় দেশগুলো আমাদের প্রশংসা করে কিন্তু এই রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে তাদের যে সাহায্যের পরিমাণটা ছিল, সেটা কিন্তু অনেক কমে গেছে। আমাদের এমনি অর্থনৈতিক চলমান সংকটে; আমরা নিজেরাই সংকটে আছি। আমাদের নিজেদেরই দুশ্চিন্তামুক্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই। সেখানে ১২ লাখ রোহিঙ্গা, যাদের সন্তান-সন্ততি হয়ে সংখ্যা বাড়ছে। এই বোঝাটা আমাদের জন্য একটা বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে আছে। পৃথিবীর অনেক দেশ আছে অভিবাসীরা যায়, তাদের আশ্রয় দেয়।
কাদের বলেন, এখানে দুনিয়ার বড় বড় দেশগুলো, যারা এ সংকট নিয়ে আজকে কথা বলে; আমাদের তো লিপ সার্ভিসের দরকার নেই! দরকার এ বোঝাটা আমাদের কাঁধ থেকে সরিয়ে নেওয়া। সার্বিকভাবে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী যেখানেই যান, তিনি সর্বাগ্রে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গটা উত্থাপন করেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজকের বিশ্বে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে, জাতিসংঘের মতো প্রতিষ্ঠান নখ-দন্তহীন সংস্থায় পরিণত হচ্ছে। তাদের কথা ইসরাইল শোনে না, বড় বড় দেশগুলো শোনে না। যখন যার যে ব্যাপারে বিরোধ আছে, সে তখন জাতিসংঘের সর্বসম্মত প্রস্তাবও নেয় না।
কাদের বলেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ কিছু সংঘাতের বিষয় আছে। ওখানে ৫৪টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী। এদের একের সঙ্গে অন্যের মিল নাই। বিশেষ করে রাখাইন এলাকার বিদ্রোহীরা প্রকাশ্যে বিদ্রোহ করে যাচ্ছে। ওদের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের জন্য আমরা যদি ক্ষতিগ্রস্ত হই, সেটা হবে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।`
তিনি বলেন, জান্তা সরকারের সঙ্গে আমাদের কোনো বৈরিতা নেই। আলাপ-আলোচনার দরজা এখনো খোলা আছে। আমরা কথা বলতে পারি। যতক্ষণ কথা বলা যাবে, আলাপ-আলোচনা করা যাবে, উই আর নট ইন গুড টিউনস—এমন পর্যায়ে না গেলে আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করছি এবং করে যাব। আমাদের যুদ্ধ পরিহার করতে হবে। আমাদের কোনো উসকানি যেন যুদ্ধের কারণ না হয়।