নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
মিয়ানমার ও ভারতের কাছ থেকে মুক্ত হয়ে এক লাখ ৩১ হাজার ৯৮ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকার দাবিদার বাংলাদেশ। বঙ্গোপসাগরে একচ্ছত্র অর্থনৈতিক এলাকার (ইইজেড) এই নীল জলরাশির সম্পদ অর্জনে প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। এর ধারাবাহিকতায় গভীর সমুদ্র থেকে টুনাসহ সমজাতীয় মাছ সংগ্রহের জন্য তিনটি ফিশিং বোট সংগ্রহ করছে বাংলাদেশ।
শনিবার (৬ মার্চ) এ সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সমুদ্রে অপার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাবে গভীর সমুদ্র থেকে টুনা মাছ সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। এ কারণে গত বছরের ১৮ আগস্ট একনেকে অনুমোদন দেয়া হয় ‘গভীর সমুদ্রে টুনা মাছ ও সমজাতীয় পেলজিক মাছ আহরণ’ প্রকল্প।
পরীক্ষামূলক নেয়া এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৬১ কোটি ছয় লাখ টাকা। এ প্রকল্পের আওতায়ই এ তিনটি ফিশিং বোট সংগ্রহের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
বর্তমানে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে পঞ্চম। ভারত, ইন্দোনেশিয়া, চীন, ভিয়েতনামের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। গভীর সমুদ্র থেকে টুনা মাছ আহরণ করলে বাংলাদেশের অবস্থান আরও ওপরে উঠে যাবে। দেশে বর্তমানে উৎপাদিত মাছের পরিমাণ ৪২ দশমিক ৭৭ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ মাছ মোট ৩৬ দশমিক ২২ লাখ মেট্রিক টন ও উপকূলীয় সামুদ্রিক মাছ ৬ দশমিক ৫৫ লাখ মেট্রিক টন।
‘গভীর সমুদ্রে টুনা মাছ ও সমজাতীয় পেলজিক মাছ আহরণ’ প্রকল্পের পরীক্ষণ ও মূল্যায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেদ পারভেজ দরপত্র আহ্বানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি সিটি নিউজকে জানান, প্রকল্প অনুমোদনের পর থেকেই আমরা কাজ শুরু করেছি। আজ দরপত্র আহ্বান করা হলো। এছাড়াও প্রকল্পে জনবল নিয়োগসহ অন্যান্য কাজ চলছে।
তিনি আশা করেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা গভীর সমুদ্রে আমাদের কার্যক্রম শুরু করতে পারব।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, গভীর সমুদ্রে টুনা মাছ ধরতে তিনটি লং লাইনার প্রকৃতির ফিশিং ভ্যাসেল সংগ্রহ, ভ্যাসেল পরিচালনায় দেশি-বিদেশি পরামর্শক নিয়োগ, টুনা ও সমজাতীয় পেলজিক মৎস্য আহরণ, গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা তৈরি, ক্রুসহ টুনা আহরণে নিয়োজিত ১০০ জনকে প্রশিক্ষণ এবং ৩৭ জন দেশীয় ও সাতজন আন্তর্জাতিক পরামর্শক নিয়োগ কাজ চলমান রয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, দরপত্র আহ্বান সংগ্রহ ও জমা দেয়ার শেষ তারিখ ১৯ এপ্রিল ২০২১ বিকেল তিনটা। এবং দরপত্র খোলা হবে এ দিন বিকেল সাড়ে তিনটায়। কার্যাদেশ দেয়ার সর্বোচ্চ আট মাসের মধ্যে দেশে আসবে তিনটি জাহাজ।
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন