প্রকাশিত: মে ১৯, ২০২৪, ১২:৩৮ এএম
আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, বাংলাদেশে জলবায়ুর পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সৃষ্ট মাত্রাতিরিক্ত বন্যায় মোট বার্ষিক দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ক্ষতি হতে পারে। এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগকে দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ হিসাবে চিহ্নিত করেছে সংস্থাটি। এতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের ক্ষতি হতে পারে ১ লাখ কোটি টাকা।
দেশজ সম্পদের ক্ষতি হতে পারে ২ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকার। সম্ভাব্য এ ক্ষতি মোকাবিলায় সংস্থাটি স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য ১০ দফা সুপারিশ করেছে।
শুক্রবার রাতে প্রকাশিত আইএমএফ-এর কারিগরিক সহায়তা প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এ প্রতিবেদনের সঙ্গে আইএমএফ-এর ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই। তবে মূল ঋণ আটকে গেলে জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত মোকাবিলার তহবিলের ঋণও আটকে যাবে। যার পরিমাণ ১৪০ কোটি ডলার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মাত্রাতিরিক্ত বন্যায় মোট জিডিপির ৬ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বর্তমানে বাংলাদেশের জিডিপির আকার ৪৪ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। একই সঙ্গে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট ঋণের বা সম্পদের স্থিতির ৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বর্তমানে ব্যাংকগুলোর ঋণ স্থিতি ২০ লাখ কোটি টাকা।আর্থিক খাতের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা করতে সংস্থাটি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে এ খাতের খেলাপি ঋণ, অবলোপন, সম্পদের মান বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ করতে বলেছে।
প্রতিবেদনে সংস্থাটি জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশকে স্বল্প মেয়াদে ২টি, মধ্য মেয়াদে ৬টি এবং দীর্ঘ মেয়াদে ২টি শর্ত বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতি একাধিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগোচ্ছে। ইউক্রেনের যুদ্ধ বাহ্যিক চাপকে তীব্র করে তোলে এবং করোনার ক্ষতি পুনরুদ্ধারে বাধার সৃষ্টি করে। বৈশ্বিক কারণে বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, সরবরাহব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় দেশটির অর্থনীতিও প্রবল চাপে পড়ে। এ কারণে বৈদেশিক মুদ্রার চলতি হিসাবে ঘাটতি বেড়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে এবং মূল্যস্ফীতির হার বাড়ছে। এসব কারণে দেশের অর্থনীতিতে বেশ চাপ যাচ্ছে।