প্রকাশিত: মে ২, ২০২৪, ১১:৫২ পিএম
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে তিনি গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফেরেন।
বুধবার সন্ধ্যায় খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শক্রমে তাকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, রাতে (বুধবার) বেশকিছু জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। ম্যাডাম সিসিইউতে (ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট) ছিলেন। পরে তাকে মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে কেবিনে হস্তান্তর করে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে মেডিকেল বোর্ড চিকিৎসা সেবা দিয়েছে।’
বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৮টার দিকে হাসপাতাল থেকে রওয়ানা দিয়ে ৯টার দিকে গুলশানের ভাড়া বাসা ফিরোজায় পৌঁছান খালেদা জিয়া। এ সময় তার গাড়িবহরের সঙ্গে ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এর আগে ৩১ মার্চ খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রেখে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ওই দফায় ৩ দিন হাসপাতাল থাকার পর বাসায় ফেরেন তিনি।
খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি চেয়ে ৬ মার্চ তার পরিবারের পক্ষ থেকে ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন। মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশসহ (খালেদা জিয়াকে দ্রুত বিদেশে পাঠানো জরুরি) সেই আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও তা নাকচ করে দেয় সরকার। বরং আগের মতো দুই শর্তে (বিদেশে যেতে পারবেন না ও ঢাকায় থেকে চিকিৎসা) বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়িয়েছে সরকার।
গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে তার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।
খালেদা জিয়া হার্টের সমস্যা, লিভার সিরোসিস ছাড়াও নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতা রয়েছে তার। কারাগার থেকে বেরোনোর পর চিকিৎসার জন্য কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি।
দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে নেওয়া হয়। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়। তখন থেকে ৬ মাস পরপর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।