প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২৪, ০৮:০৮ এএম
লাপাত্তা দুই বিমান কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এবার মামলা হয়েছে। বিমানবন্দর থানায় করা এয়ারলাইন্সটির সাধারণ ডায়েরিকে মামলা হিসাবে গ্রহণ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত এই অনুমতি দেন।
পুলিশ জানায়, বিমানের করা সাধারণ ডায়েরিকে আরও অধিক তদন্তের জন্য মামলা হিসাবে গ্রহণ করতে আদালতে আবেদন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি শেষে মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামলার পক্ষে রায় দেন। আদালত আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মামলার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জকে দায়িত্ব দেন এবং আদেশের অনুলিপি পাঠান।
বাংলাদেশ বিমানের এক চিঠিতে বলা হয়েছে, লাপাত্তা দুই বিমান কর্মকর্তার মধ্যে সোহান আহম্মেদ একটি বেসরকারি এয়ারলাইন্সে চাকরি করছেন। অপর কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন গোপনে কানাডা পালিয়ে গেছে। যদিও ওই এয়ারলাইন্স সূত্রে জানা গেছে, সোহান সেখানে যোগদান করেনি। বিমানের দাবি, তারা দুজন খুবই স্পর্শকাতর বিভাগ ও টেকনিক্যাল জ্ঞানসম্পন্ন কর্মকর্তা ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে তাদের কাছে রক্ষিত ছিল বিমানের কাস্টমার সার্ভিস, মার্কেটিং ও প্রশাসন শাখার একাধিক গোপনীয় চুক্তি ও আরআই পলিসি (রেসপন্সিবল ইনভেস্টমেন্ট পলিসি)।
সোহান আহমেদ ও আনোয়ার এসব তথ্য চুরি করে অন্য কাউকে দিতে পারে। এ কারণে তারা অবিলম্বে দুজনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় জিডি করেছে। বিমান বলছে, সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সটি হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে কোনো ধরনের অনাপত্তি সনদ (এনওসি) ছাড়া বিমানের কর্মকর্তা সোহান আহম্মেদকে নিয়োগ দিয়েছে। তবে সোহান আহম্মেদ অবশ্য বলেছেন, তিনি বিমান থেকে পদত্যাগ করেছেন। তার পদত্যাগপত্র বিমান গ্রহণ করেছে। তিনি গত বছর ১১ ডিসেম্বর বিমানের কাছে তার অফিস আইডি কার্ড জমা দিয়েছেন। বিমানের (ডিজিএম মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস) মামুনুর রশিদ তার আইডি কার্ড গ্রহণ করেন। গত বছর ৩ অক্টোবর তিনি বিমানে পদত্যাগপত্র জমা দেন। বিমানের জেনারেল ম্যানেজার (মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস) শামসুল করীম তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন। তবে পদত্যাগপত্রের গায়ে লেখা ছিল কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে ১ জানুয়ারি থেকে পদত্যাগপত্র কার্যকর হতে পারে। বিমানের প্রশাসন শাখা সূত্রে জানা গেছে, শামসুল করীমের সুপারিশ তারা পেয়েছেন কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। অর্থাৎ তার পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়নি।
বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিম বলেন, দুই কর্মকর্তার মধ্যে মূলত আনোয়ার হোসেনই ছিল মূলহোতা। সোহান আহমেদ অবশ্য অফিসিয়াল প্রসিডিউর মেইনটেইন করে বিমান থেকে অনুমতি নেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছে। যদিও তার পদত্যাগপত্র এখনো গৃহীত হয়নি। তবে আনোয়ার হোসেন স্রেফ পালিয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও অনেক অভিযোগ তিনি জানতে পেরেছেন বলেও জানান। তিনি বলেন, আনোয়ারের পাসপোর্ট জব্দ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং কানাডাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
শফিউল আজিম বলেন, বিমানের করা জিডিটি মামলা হয়েছে। মামলার বাদী এখন পুলিশ। কাজেই পুলিশই এখন সবকিছু করবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে আনোয়ার অন্য দেশে গিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি করবে, এটা হতে দেওয়া যাবে না। এখন থেকে বিমানের কর্মকর্তাদের বিদেশ যেতে হলে অবশ্যই অনুমতি নিতে হবে।