• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

গরিবের টাকায় ধনীদের কম দামে পানি দেওয়া যাবে না: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০২৪, ১১:২৯ পিএম

গরিবের টাকায় ধনীদের কম দামে পানি দেওয়া যাবে না: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের গরিব মানুষের ভ্যাট-ট্যাক্সের টাকায় ঢাকার অভিজাত এলাকায় কম দামে ওয়াসার পানি সরবরাহের পক্ষে নন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, সারা দেশের গরিব মানুষের কাছ থেকে আমরা ভ্যাট-ট্যাক্সের টাকা সংগ্রহ করি। সেই টাকা নিয়ে এসে ঢাকায় খরচ করতে হচ্ছে। গুলশানে যারা বসবাস করছেন, তাদেরও পানির দামে ভর্তুকি দেব? এটা কি যৌক্তিক? গরিবের টাকা দিয়ে ধনীকে তো ভর্তুকি মূল্যে পানি খাওয়াতে পারব না।

ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। রোববার কাওরান বাজারে ওয়াসা ভবনে দ্বিতীয় মেয়াদে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ায় মন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতে এ সভার আয়োজন করে ওয়াসা।

ওয়াসার পানির দাম ও মান নিয়ে সমালোচনার জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা ওয়াসাতে পানির দাম বাড়ানো নিয়ে আমাকে সেভাবে তখন কিছু বলা হয়নি। চট্টগ্রাম ওয়াসায় যখন দাম বাড়ানোর কথা উঠল, আমি বলেছিলাম- হ্যাঁ, অবশ্যই দাম বাড়াতে হবে। আপনি পানি পান করবেন, ব্যবহার করবেন এ পানির মূল্যটা কে দেবে? সেজন্য যখন আমাকে পানির দাম নিয়ে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, আমি স্পষ্টভাবে বলেছি- পানির দাম বাড়াতে হবে। কারণ পানির উৎপাদন খরচ বেড়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ঢাকায় যে পানি (প্রতি এক হাজার লিটার) আমরা ১৫ টাকায় বিক্রি করছি, তার উৎপাদন খরচ পড়ছে ৩০ টাকা। এই যে ১৫ টাকা ভর্তুকি দিচ্ছি, এ টাকাটা আমরা কোথায় পাব? সারা দেশের গরিব মানুষের কাছ থেকে রাজস্ব নেব, সেই টাকা নিয়ে এসে ঢাকায় খরচ করব? গুলশানে যারা থাকেন, তারা মাসে অনেকে পাঁচ লাখ টাকা খরচ করেন। অথচ পানির দাম ১০০-২০০ টাকা বেড়ে গেলে সেটা সহ্য হবে না। তাহলে দেশের গরিব মানুষের জন্য আমাদের যে প্রতিশ্রুতি, তা কীভাবে পূরণ করব?

ভর্তুকি কমানোর ওপর জোর দিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা সব রাষ্ট্রের কাঁধের ওপর তুলে দেই। রাষ্ট্র আর কতটা ভর্তুকি দিয়ে চালাবে?

সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করে একটি সিস্টেমের মাধ্যমে। সরকার জনগণের কাছ থেকে অর্থ আহরণ করে। সেই টাকাটা আবার জনগণের কল্যাণে ব্যয় করে। সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে রাষ্ট্র বর্ধিত আকারে খরচ করবে। অভিজাত এলাকায় ভর্তুকি দিতে গিয়ে তা ফুরিয়ে গেলে পিছিয়ে পড়াদের এগিয়ে আনা সম্ভব হবে না।

ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানকে বারবার নিয়োগ দেওয়া নিয়ে সমালোচনার জবাবও দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, তাকসিম এ খানের কথা বলেন, আর যার কথাই বলেন। কোনো মানুষ তো সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। আমাকে নিয়ে বিতর্ক শুরু করেন, মাসের পর মাস বিতর্ক করা যাবে। তাকসিম এ খানকে বারবার ঢাকা ওয়াসার দায়িত্ব দেওয়ায় সমালোচনা হয়েছে। তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। তিনি কাজ করছেন কিনা, সেটাই বড় ইস্যু।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান। অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইব্রাহিম, ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সুজিত কুমার বালা প্রমুখ।

আর্কাইভ