• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ

নির্বাচনে হেরে গেলেন যেসব আলোচিত প্রার্থী

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২৪, ১২:৪১ পিএম

নির্বাচনে হেরে গেলেন যেসব আলোচিত প্রার্থী

ছবি: সংগ্রহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

এবার দ্বাদশ নির্বাচনে স্বতন্ত্রদের কাছে হেরেছেন আওয়ামী লীগের বেশ কজন প্রভাবশালী প্রার্থী। ভোটারদের মনে সাড়া জাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। জয় পাননি হেভিওয়েট হাসানুল হক ইনু, কাজী জাফর উল্যাহ চৌধুরী, ফজলে হোসেন বাদশা, মৃণাল কান্তি দাস, অসিম কুমার উকিল ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জুসহ অনেকে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন মানেই ভোটের মহারণ। নিশ্চিত বিজয় ভেবেও অনেক সময় মেনে নিতে হয় পরাজয়। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দেখা গেল একই চিত্র। রাজনীতির মাঠে দীর্ঘদিনের খেলোয়াড়। একাধিকবার সংসদে প্রতিনিধিত্ব করলেও এবারের নির্বাচনে পরাজয়বরণ করেছেন অনেকে। গান আর অভিনয়ে দর্শক মাতিয়ে রাখলেও জনপ্রতিনিধিত্বে সাড়া ফেলতে পারেননি শিল্পীরাও।


এবারের নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে অংশ নেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দলটির দ্বাদশ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী জাফর উল্যাহ চৌধুরী। এক লাখ ৪৮ হাজার ৩৫ ভোট পেয়ে এ আসনে টানা তৃতীয়বারের মতো হ্যাট্রিক বিজয় ধরে রেখেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন। বিপরীতে জাফরউল্লাহ পেয়েছেন এক লাখ ২৪ হাজার ৬৬ ভোট।

রাজশাহী-২ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন তিন বারের সংসদ সদস্য ও ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদকে হারিয়ে এবার জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুর রহমান বাদশা। ফজলে হোসেন বাদশা পেয়েছেন ৩১ হাজার ৪৬৬ ভোট। আর ঈগল মার্কা নিয়ে ৫৪ হাজার ৯০৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন নতুন বাদশা।

নির্বাচনে কুষ্টিয়া-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে অংশ নিয়ে হেরে গেছে সাবেক তথ্যমন্ত্রী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি ও টানা তিনবারের সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনু। ১৪ দলীয় জোটের অংশ হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৩৬ হাজার ৭৩১ ভোট। বিপরীতে ৪১ হাজার ২৮২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুল আরেফিন।

নেত্রকোনা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসিম কুমার উকিলকে হারিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য ইফতেখার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু। ট্রাক প্রতীক নিয়ে পিন্টু পেয়েছেন ৭৬ হাজার ৮০৩ ভোট। আর নৌকা প্রতীকে অসীম কুমার পেয়েছেন ৭৪ হাজার ৫৫০ ভোট। 

মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লবের কাছে হেরে গেছেন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী মৃণাল কান্তি দাস। নৌকা প্রতীক নিয়ে তিনি ভোট পেয়েছেন ৮২ হাজার ৮৩৩। বিপরীতে ৮৯ হাজার ৬৯৫ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন ফয়সাল বিপ্লব।

পিরোজপুর-২ আসনে সাত বার অংশ নেয়া নৌকা প্রতীকের জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রধান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু প্রথমবারের মতো হেরেছেন আওয়ামী লীগের জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহারাজের কাছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ৯৯ হাজার ২৬৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন মহারাজ। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আনোয়ার হোসেন পেয়েছেন ৭০ হাজার ৬৮১ ভোট।

নির্বাচনে হেরেছেন আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মো. আব্দুস সোবহান মিয়া। মাদারীপুর-৩ আসনে থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভোট পেয়েছেন ২২ হাজার ২৩৮। বিপরীতে ঈগল প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম। তিনি পেয়েছেন ৪৭ হাজার ৩৩ ভোট।

যশোর-৫ আসনে হেরেছেন এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। পেয়েছেন ৭২ হাজার ৩৩২ ভোট। আর ৭৭ হাজার ৪৬৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা কৃষক লীগের সহ-সভাপতি ইয়াকুব আলী।

এদিকে, মানিকগঞ্জ-২ আসনে জনগণের প্রতিনিধিত্ব থেকে সরে যেতে হয়েছে তিনবারের সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে। তিনি ধরাশায়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর কাছে। মমতাজ পেয়েছেন ৮২ হাজার ৩০৭ ভোট, আর ৮৮ হাজার ৩০৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন দেওয়ান জাহিদ।

অন্যদিকে, নৌকা প্রতীক না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রাজশাহী-১ আসনে নির্বাচন করেন ঢাকাই সিনেমার নায়িকা মাহিয়া মাহি। কিন্তু বিশাল ব্যবধানে তাকে পিছিয়ে রেখে নির্বাচিত হন নৌকার প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি জয়ী হয়েছেন এক লাখ ৩ হাজার ৫৯২ ভোটে। আর সবমিলে মাহিয়া মাহি পেয়েছেন মাত্র ৮ হাজার ২৬২ ভোট।
 

সাজেদ/

জাতীয় সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ