• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা রোধে ৯১ বিশিষ্ট নাগরিকের আহ্বান

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২০, ২০২৩, ০১:১৮ এএম

নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা রোধে ৯১ বিশিষ্ট নাগরিকের আহ্বান

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা রোধ করার আহ্বান জানিয়েছেন ৯১ জন বিশিষ্ট নাগরিক। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ১২ ডিসেম্বর গাজীপুরের রেললাইনের ফিস প্লেট উপড়ে ফেলা ও আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা বিমানবন্দর ও তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনের মাঝামাঝি জায়গায় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের বগিতে সন্ত্রাসীচক্রের অগ্নিসংযোগের ঘটনা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। এসব নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে—আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রতিরোধ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সুরাইয়া আক্তার স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত সংবিধান অনুযায়ী ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা সচেষ্ট রয়েছেন। কিন্তু একটি মহল নির্বাচনকে বানচাল করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিবৃতিতে তারা বলেন, গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে গণসমাবেশের নামে বিএনপির উচ্ছৃঙ্খল কর্মীরা প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে একজন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে। এমনকি প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও হাসপাতালে তাণ্ডব চালায়। এরপর থেকে অদ্যাবধি বিএনপি-জামায়াতের কর্মী-সমর্থকরা রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে বিপুল সংখ্যক যানবাহন ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নজিরবিহীন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী বিশিষ্ট নাগরিকরা মনে করেন, এসব নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনকে প্রতিরোধ করে দেশের চলমান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করা। একই লক্ষ্যে দেশের একটি চিহ্নিত মহল সংবিধানের একটি নির্ধারিত ধারার অপব্যাখ্যা দিয়ে নির্বাচনের সময়সূচি পরিবর্তন করে সাংবিধানিক অচলাবস্থা সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত।

বিবৃতিদাতারা বলেন, ইতোমধ্যে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৭টি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। চূড়ান্তভাবে অংশগ্রহণ করা প্রার্থীদের সংখ্যা ১৮৯৬ জন। প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে সারা দেশে সৃষ্টি হয়েছে অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের উৎসমুখর পরিবেশ।

বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, সকল বিভ্রান্তি ও বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে বাংলাদেশের মানুষ এখন মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে উন্নয়নের ধারা অক্ষুণ্ন রাখার লক্ষ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। কিন্তু একটি চিহ্নিত কুচক্রীমহল দেশের জনগণ ও নির্বাচনের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। রাজনীতির আড়ালে সক্রিয় উন্নয়ন ও প্রগতিবিরোধী এ অপশক্তির বিরুদ্ধে দেশের সচেতন নাগরিকদের সোচ্চার হওয়া একান্ত প্রয়োজন। এ অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ দেশের সব নাগরিকের প্রতি নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নির্বাচনকে সফলভাবে সম্পন্ন করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে রয়েছেন—সাবেক প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, শিক্ষক ও গবেষক মুনতাসীর মামুন, শিল্পী হাশেম খান, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর আতিউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, সাবেক আইজিপি ও রাষ্ট্রদূত ড. হাসান মাহমুদ খন্দকার, অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ, মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী বীর প্রতীক, সাবেক আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া, সাংবাদিক শ্যামল দত্ত, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, লেখক ও গবেষক শাহরিয়ার কবির প্রমুখ। 

 

 

জেকেএস/

জাতীয় সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ