প্রকাশিত: নভেম্বর ১২, ২০২৩, ০৫:৩১ পিএম
মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে বাংলাদেশকে জবাবদিহিতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি। আগেও এ সংস্থাটি বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশকে নিয়ে তাদের ইচ্ছেমতো বিবৃতি দিয়েছে।
এবার আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দ্রুততার সঙ্গে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহিতায় আনতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে জাতিসংঘের ইউনিভার্সেল পিরিয়ডিক রিভিউকে (ইউপিআর) ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারবিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
শনিবার নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক এ সংগঠনের ডেপুটি আঞ্চলিক পরিচালক লিভিয়া সাক্কারদি বলেছেন, বাংলাদেশের চতুর্থ ইউপিআর এমন একসময়ে হতে যাচ্ছে, যখন মানবাধিকার এবং গুরুত্বপূর্ণ সমালোচনাকারী প্রতিষ্ঠান, বিরোধীদলীয় নেতা, নিরপেক্ষ মিডিয়া হাউস এবং নাগরিক সমাজ সিস্টেমেটিকভাবে আক্রমণ মোকাবিলা করছে। এই মূল্যায়ন বাংলাদেশের মানবাধিকার রেকর্ড যাচাই এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতা ও প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘনের জন্য কর্তৃপক্ষকে যাচাই করার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ।
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, প্রতি চার বছরে একবার জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্রের মানবাধিকার রেকর্ড রিভিউয়ের সুযোগ এনে দেয় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ইউপিআর। এর আগে ইউপিআরে বাংলাদেশের সামনে যেসব সুপারিশ দেওয়া হয়েছিল তা বাস্তবায়নে ইউপিআরে মূল্যায়ন জমা দিয়েছে অ্যামনেস্টি। তাতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সমাবেশ ও শান্তিপূর্ণ সভাসমাবেশ, অন্যান্য মানবাধিকার- যেমন জোরপূর্বক গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সংখ্যালঘুদের অধিকার, মৃত্যুদণ্ড ও শরণার্থীদের অধিকারের বিষয়ে উদ্বেগ তুলে ধরা হয়েছে।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ে অ্যামনেস্টি বলেছে, এর আগে ২০১৮ সালের মে মাসে বাংলাদেশের শেষ ইউপিআর পর্যালোচনা করা হয়। সেখানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সুরক্ষিত রাখার সুপারিশ সরকার মেনে নিয়েছিল। কিন্তু গত পাঁচ বছরে অধিকারকে ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে বেপরোয়াভাবে আইনের সংস্কার এবং বিভিন্ন আইনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার। নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩-এ রয়ে গেছে বহুল বিতর্কিত সাবেক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অনেক বিষয়।
অ্যামনেস্টি আরও বলেছে, বাংলাদেশ সরকারকে অবশ্যই সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩’কে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে যে, এই আইন মানবাধিকারের পক্ষের ব্যক্তি, অধিকারকর্মী, সমালোচক, শান্তিপূর্ণভাবে ভিন্নমতের ব্যক্তিদের টার্গেট করতে ব্যবহার হচ্ছে না।
জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের মতো শান্তিপূর্ণভাবে মানবাধিকার চর্চার জন্য যাদেরকে আটক করা হয়েছে, তাদের অবিলম্বে এবং নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
এতে জোরপূর্বক গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে বলা হয়, যদিও গত ইউপিআরে বাংলাদেশ সরকার এসব বিষয় প্রতিরোধ এবং এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও তাদের বিচারের আওতায় আনার সুপারিশ সমর্থন করেছিল, তবু গত পাঁচ বছরে উদ্বেগজনকভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও জোরপূর্বক গুম দেখা গেছে। ওই সময় থেকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আইন রক্ষাকারীদের হাতে সংঘটিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের পর জোরপূর্বক গুমের একটি পরিষ্কার প্যাটার্ন অনুসন্ধান করে তা প্রামাণ্য আকারে উপস্থাপন করে।
সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
জেকেএস/