• ঢাকা সোমবার
    ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
বঙ্গবন্ধু টানেল

চীনের সাংহাইয়ের মতো বদলে যাবে দেশের অর্থনীতি, বাড়বে কর্মসংস্থান

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২৩, ০৪:৩৬ পিএম

চীনের সাংহাইয়ের মতো বদলে যাবে দেশের অর্থনীতি, বাড়বে কর্মসংস্থান

ছবি: সংগ্রহীত

চট্টগ্রাম ব্যুরো

 

কর্ণফুলি নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল পাল্টে দেবে পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রামকে। এটি চালু হলে পর্যটনে যোগ হবে নতুন মাত্রা। ইকোনমিক জোনসহ শিল্প কারখানায় অঞ্চলটি সমৃদ্ধ হয়ে চীনের সাংহাইয়ের মতো বদলে যাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি। কর্মসংস্থানের পাশাপাশি যোগাযোগব্যবস্থায় আসবে আমূল পরিবর্তন। এছাড়াও সংশ্লিষ্টদের মতে, তৈরি হবে নতুন নতুন বিনিয়োগের সম্ভাবনা।

টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে সরেজমিনে দেখা যায়, এটি চীনের সাংহাইয়ের আদলে ওয়ান সিটি টু টাউন মডেল আনোয়ারা ও কর্ণফুলিকে উপশহর করে গড়ে তোলার সম্ভাবনার সব দুয়ার খুলে দিয়েছে। এরই মধ্যে ওয়াই জংশন থেকে কালাবিবির দিঘি পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ ছয় লেনের সড়কের কাজ প্রায় শেষ। সংযোগ সড়কের দুপাশে গড়ে উঠছে ছোট-বড় শিল্প-কারখানা। হু হু করে আশপাশের জায়গার দাম বেড়ে গেছে চার পাঁচগুণের বেশি। সৃষ্টি হচ্ছে বহু কর্মসংস্থান।

 

স্থানীয়রা জানান, বঙ্গবন্ধু টানেলের কারণে এখানে নতুন নতুন ছোট-বড় শিল্প-কারখানা গড়ে উঠছে। এতে অনেক যুবকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। সেই সঙ্গে মানুষের জীবনযাত্রার মানও পরিবর্তন হচ্ছে। 

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এখানে আসবেন এবং নতুন নতুন শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে। বিশেষ করে কয়েক লাখ বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হবে।

আনোয়ারা প্রান্তে আগেই গড়ে ওঠেছে কোরিয়ান ইপিজেড, সিইউএফএল, কাফকোসনসহ নানা শিল্প কারখানা। সাতশ ৩০ একর জায়গায় গড়ে উঠছে চায়না ইকোনমিক জোন। চলছে মহা কর্মযজ্ঞ।  টানেলটি শহরের সঙ্গে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে কানেক্টিভিটি বাড়াবে বলে জানান এফবিসিসিআই-এর সভাপতি মাহবুবুল আলম।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চলে শিল্প-কারখানা গড়ে উঠলে চীনের সাংহাইয়ের মতো দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

টানেলটি ২৮ অক্টোবর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ ৩.৪ কিলোমিটারের এ টানেলটি পার হওয়া যাবে মাত্র ৫ মিনিটে।

প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, ৩৫ ফুট চওড়া ও ১৬ ফুট উঁচু দুটি টিউব ১১ মিটার ব্যবধানে নির্মাণ করা হয়েছে, যাতে ভারী যানবাহন সহজে টানেলের মধ্যদিয়ে চলাচল করতে পারে। নির্মাণাধীন টানেলের দৈর্ঘ্য হবে ৩.৪০ কিলোমিটার। এতে ৫.৩৫ কিলোমিটারের একটি অ্যাপ্রোচ রোড ও একটি ৭৪০ মিটার ব্রিজের পাশাপাশি মূল শহর, বন্দর এবং নদীর পশ্চিম দিককে এর পূর্ব দিকের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।

২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যৌথভাবে বঙ্গবন্ধু টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রকল্পের ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রথম টানেল টিউবের কাজের উদ্বোধন করেন।

বর্তমানে প্রকল্পের খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৬৮৯.৭১ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ অর্থায়নে টানেল প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। চীনের এক্সিম ব্যাংক দুই শতাংশ সুদ হারে ঋণ দিচ্ছে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা এবং বাকি অংশের অর্থায়ন করছে বাংলাদেশ সরকার।

 

সাজেদ/

আর্কাইভ