প্রকাশিত: জুলাই ৫, ২০২১, ০৮:১৩ পিএম
করোনা আক্রান্তদের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের
চাহিদা পূরণে বুয়েট উদ্ভাবিত ‘অক্সিজেট’ নামক স্বল্পমূল্যের সি-প্যাপ ভেন্টিলেটর ডিভাইস অনুমোদনে গুরুত্বারোপ করেছেন হাইকোর্ট। ডিভাইসটি অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নজরে
নিতেও স্বাস্থ্য সচিব, আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
সোমবার
(৫ জুলাই) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের
নেতৃত্বাধীন একক ভার্চুয়াল হাইকোর্ট
বেঞ্চ এই পর্যবেক্ষণ দেন।
আদালত
বলেছেন, ‘এমন একটা ভালো
জিনিস আবিষ্কার হলো। এটা নিয়ে
পাবলিক ক্যাম্পেইন দরকার। প্রধানমন্ত্রী ইনোভেটিভ মাইন্ডের। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনার জন্য
তার মুখ্য সচিবকে লিখিতভাবে জানান। স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতর ও অ্যাটর্নি জেনারেলকেও
লিখিতভাবে জানাবেন। আদালতের আদেশ ছাড়াই সমাধান
করা ভালো।
অক্সিজেটের
ওপর মিডিয়ায় ইতিবাচক প্রতিবেদন পড়েছি। কোভিড তো আমাদের সবার
চোখ খুলে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী
অনেক ইনোভেটিভ মাইন্ডের।
সম্প্রতি
বুয়েটের বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডক্টর তওফিক হাসানের নেতৃত্বে তৈরি করেছে ‘অক্সিজেট’ নামে
একটি ডিভাইস। যা দিয়ে হাসপাতালের
সাধারণ বেডেই ৬০ লিটার পর্যন্ত
হাই ফ্লো অক্সিজেন দেয়া
যায়।
বিষয়টি
হাইকোর্টের নজরে এনে ব্যারিস্টার
অনীক আর হক বলেন,
‘অক্সিজেটের দ্বিতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালের কয়েকজন করোনা রোগীকে এ যন্ত্র দিয়ে
হাই ফ্লো অক্সিজেন দেয়া
হয়েছে। কিন্তু ডিজিডিএ এটা ব্যবহারের অনুমতি
দিচ্ছে না। তারা বলেছে,
কোস্পানির উৎপাদিত পণ্য না হলে
অনুমতি দেয়া সম্ভব নয়।’
এ
পর্যায়ে বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম বলেন, ‘পত্রিকায়
দেখলাম হাই ফ্লো ন্যাজাল
ক্যানোলা গত বছর ৫
থেকে ১০ লাখ টাকায়
বিদেশ থেকে আনা হয়েছে।
কিন্তু সেগুলোর ক্রয়মূল্য দেখানো হয়েছে ৮০ থেকে ৯০
লাখ টাকা। এ কারণে আমরা
সব সময় বিদেশ থেকে
সরকারি জিনিসপত্র কেনাকাটা করতে বেশি আগ্রহী
হই। দেশীয় উদ্ভাবিত জিনিসে এতটা আগ্রহী হই
না।’
এ
সময় আইনজীবী বলেন, ‘হাই ফ্লো ন্যাজাল
ক্যানোলার সংকটে প্রাণহানি বাড়ছে। সে ক্ষেত্রে অক্সিজেট
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এ পর্যায়ে আদালত
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের কাছে লিখিত আবেদন
দেয়ার পরামর্শ দেন।
কোভিড-১৯ আক্রান্তদের কম
খরচে অক্সিজেনের চাহিদা পূরণে ‘অক্সিজেট’ সি-প্যাপ ভেন্টিলেটর
যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন বুয়েটের একদল ছাত্র-শিক্ষক।
এই প্রকল্পটিতে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন
একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ শীর্ষক প্রকল্প, অঙ্কুর ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন এবং মানুষ মানুষের
জন্য ফাউন্ডেশন। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে
নিয়োজিত আছেন বুয়েট বায়োমেডিক্যাল
ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মীমনুর রশিদ, কাওসার আহমেদ, ফারহান মুহিব, কায়সার আহমেদ, সাঈদুর রহমান এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে
রয়েছেন বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. তওফিক হাসান।
মামুন/এম. জামান