প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২৩, ০৬:২৫ পিএম
ট্রেনে আরাম করে রাজধানী ঢাকায় যাওয়ার প্রত্যাশা দক্ষিণাঞ্চলের পদ্মাপাড়ের এলাকার মানুষের। তাই রেললাইন স্থাপনের কাজের শুরু থেকেই আগ্রহের শেষ নেই মাদারীপুর জেলার শিবচর, শরিয়তপুরের জাজিরা এবং ভাঙ্গা উপজেলার পুলিয়া, মালিগ্রাম, বামনকান্দাসহ আশেপাশের এলাকার মানুষের। ১০ অক্টোবরকে সামনে রেখেও উৎসাহ-উদ্দীপনা বইছে এই অঞ্চলের মানুষের মনে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রীর রেল উদ্বোধনকে ঘিরে পদ্মাপাড়ের রেললাইন সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে বইছে আনন্দ। পদ্মাসেতু পার হয়ে প্রথম স্টেশন রয়েছে শিবচরের কুতুবপুর এলাকার ‘পদ্মা স্টেশন’। এরপরই রয়েছে শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের বাচামারা এলাকায় ‘শিবচর স্টেশন’। পরবর্তী নবনির্মিত স্টেশনটি রয়েছে ভাঙ্গা উপজেলার বামনকান্দা এলাকায়। রেল উদ্বোধনকে ঘিরে এ সকল এলাকার মানুষের মধ্যে বইছে আনন্দের বন্যা! প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে নেওয়া হয়েছে নানা প্রস্তুতিও। রেললাইন ঘিরে সাধারণ মানুষের আগ্রহের যেন শেষ নেই। বিশেষ করে বয়স্কদের মধ্যে অন্য রকম আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে এই রেললাইন ঘিরে। ট্রেন চালু হবে এই প্রতীক্ষা তাদের। তাদের মতে ‘ট্রেনে আরাম করে ঢাকা যাওয়া যাবে’। আবার খরচ বাঁচবে। যানজটে আটকে থাকারও কোন কারণ থাকবে না।
সত্তরোর্ধ্ব আব্দুল মালেক হাওলাদার বলেন, ট্রেনে যাতায়াত অনেকটাই আরামের হবে। বাড়ি থেকে ঢাকা যেতে-আসতে কোনো সমস্যা থাকবে না। নিরাপদে, আরামে যাওয়া যাবে।
স্থানীয় আব্বাস আলী নামের এক ব্যক্তি বলেন, বর্তমানে বাসে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা লাগে ঢাকা যেতে। আর বাসে পথে পথে অনেকবার থামিয়ে যাত্রী তোলে। গরমে বাসের মধ্যে বসে থাকা কষ্টকর হয়ে উঠে। তার ওপর পথেই চলে যায় সময়ের বেশি অংশ। গুলিস্তান গেলে জ্যামে আটকা পড়তে হয়। সব মিলিয়ে বেশ কষ্টদায়ক। ট্রেনে তো এই সমস্যা থাকবে না। ভাড়াও কম লাগবে। ট্রেন জার্নি আরামদায়ক ও নিরাপদও বটে।
পাঁচ্চরের দোকানি ভুলু মাতুব্বর নামের এক ব্যক্তি বলেন, ট্রেন চালু হলে ঢাকা থেকে সহজেই মালামাল আনা-নেওয়া করা যাবে। বাসের চেয়ে ট্রেনে যাতায়াত হবে সহজ ও স্বল্প খরচে। আমরা ট্রেন চালু হবার অপেক্ষায় আছি।
১০ অক্টোবর কাঙ্ক্ষিত ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। পুরো এলাকা সাজ সাজ রব। রয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। ট্রেন চলাচল উদ্বোধন নিয়ে উদ্দীপনা বিরাজ করছে শিবচরের সাধারণ মানুষের মধ্যেও।
জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ ও মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসনের ৬ বারের সফল সংসদ সদস্য নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেছেন, পদ্মা সেতু হয়ে রেল সংযোগ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক উদ্বোধনকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ ও আনন্দ বিরাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে মানুষ মুখিয়ে আছে। যেহেতু পদ্মার পাড়ে শিবচরে ২টি রেল স্টেশন আমাদের মধ্যে পড়েছে একটি পদ্মা স্টেশন অপরটি শিবচর স্টেশন। এরফলে অর্থনৈতিকভাবে আমরা অনেক বেশি উপকৃত হবো। নৌপথ,সড়ক পথের পর আমরা রেলপথে সংযুক্ত হতে যাচ্ছি। রেল সবচেয়ে কম খরচে মালামাল ও যাত্রী পরিবহন করবে। এতে সময়ও ঠিক থাকবে। যেসময় রেল পৌঁছানোর কথা সেই সময়ই পৌঁছাবে। ভাড়াও কম হবে। সাধারণ মানুষ অনেক বেশি উপকৃত হবে।
চীফ হুইপ আরো বলেন, আমরা না চাওয়ার পরও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের রেল দিয়েছেন। আমরা রেল পাবো এটা কোনদিন আমরা স্বপ্নও দেখিনি, আমরা কোনদিন আশাও করিনি, কখনো দাবীও করিনি। এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার নিজের পরিকল্পনায় পদ্মা সেতুর সাথে একটি নতুন সংযোগ আমাদের দিয়েছেন। আমরা দক্ষিনবঙ্গের মানুষ এজন্য ভাগ্যবান এবং আমরা এজন্য আসলেই তার কাছে ঋণী হয়ে গেছি সবদিক দিয়ে। রেল উদ্বোধন নিয়ে শিবচরেও আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আসলে মানুষকে ডাকা লাগবে না, মানুষ এখন এতই খুশি যে তারা এমনিতেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে চলে আসবে।
সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
জেকেএস/