প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩, ০১:৩৭ এএম
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে কোনো ভাটা পড়েনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির বৈঠকে আন্তরিকতায় স্পষ্ট বার্তা পাওয়া গেছে বলে মনে করছেন দেশটির বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিভিন্ন বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগে ভারত কিছুটা নাখোশ হলেও, ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত বলেও মনে করছেন তারা।
উপলক্ষ জি-২০ সম্মেলন হলেও তিন দিনের সফরে দিল্লিতে এসে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম কর্মসূচিই ছিলো ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। নয়াদিল্লিতে পা রাখার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে বৈঠকে বসেন দুই সরকার প্রধান।
বিশ্বের বড়-বড় নেতাদের ভিড়েও, নিকটতম প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বাসভবনে ডেকে নিয়ে বৈঠকের আনুষ্ঠানিকতায় যে হৃদ্যতা দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি- তাই এখন ঘুরে-ফিরে আলোচিত বিভিন্ন মহলে।
ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে দুইপক্ষই জানায়, বেশ ফলপ্রসূ আর খোলামেলা আলোচনা হয় দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে। প্রাধান্য পেয়েছে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নানা ইস্যু। গুরুত্ব দেয়া হয় অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিষ্পত্তির ওপর।
তবে বাংলাদেশ ও ভারতের দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সুসম্পর্কের এই সময়ে এসে রাজনৈতিক সমঝোতাও গুরুত্ব পেয়েছে বলে জানাচ্ছে বিভিন্ন সূত্র। যেখানে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে বাইরের হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে বার্তা দেয় ভারত।
ভারতের সিনিয়র সংবাদিক গৌতম লাহিড়ী বলেন, ‘ভারতের চীন সম্পর্কে উদ্বেগ আগে। ভারত চায় না যে এই অঞ্চলে চীনের প্রভাব বৃদ্ধি পাক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা হয়ে থাকলে ভারত সেটা উল্লেখ করতে পারে। সেক্ষেত্রে হয়তো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুঝিয়েছেন, বাংলাদেশ যেহেতু স্বাধীন সার্বোভৌম রাষ্ট্র, তারা আর্থিক উন্নয়নের জন্য সাহায্য নিতে পারে। কিন্তু যদি (বাংলাদেশ ও ভারতের) পরীক্ষিত রক্তের সম্পর্ক হয়, তবে তারা এমন কিছু চাইবেন না যাতে করে সে সম্পর্কে চীন কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে।’
চীনা বিনিয়োগে হঠাৎ ঢাকা-নয়াদিল্লি সম্পর্ক শীতল হয়েছে, এমন সমালোচনারও কৌশলগত অবস্থান দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকে উচ্চারিত হয়েছে বলেও ধারণা অনেকের।
গৌতম লাহিড়ী বলেন, ভারত এই প্রথম শেখ হাসিনার নীতির প্রশংসা করলো যেটা ইন্দো-প্যাসিফিক। ইন্দো-প্যাফিসিফিক, এটা আর্থিক মঞ্চ হলেও আদতে এর উদ্দেশ্য হলো, চীনের প্রভাব খর্ব করা। একান্ত কথাবার্তায় যেখানে আর কেউ ছিলো না নিশ্চয় একে অপরকে পারস্পরিক উদ্বেগের কথা বলেছেন। তারপরে কিন্তু প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদি) টুইট (এক্স) করেছেন যে, আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে।
তিনি বলেন, সম্পর্কের সোনালী অধ্যায় তো আগে থেকেই ছিলো। আমার ধারণা, সম্পর্কটা আরও উন্নত হচ্ছে এবং হবে।
এদিকে, দিল্লিতে স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টায় প্রগতি স্মরণির ভারত মন্ডপে জি-টুয়েন্টির লিডার্স সামিটের মূল আনুষ্ঠানিকতায় হাজির ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও।
সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
জেকেএস/