প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৩, ০৬:০৪ পিএম
রেলের উন্নয়নে গত ১০ বছরে খরচ হয়েছে প্রায় ৭২ হাজার কোটি টাকা। আকাশছোঁয়া বিনিয়োগের পরও প্রতিষ্ঠানের লোকসান প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচের পরও ট্রেনের গতি তো বাড়েইনি, উল্টো কমেছে। এখনও দেশের ৬০ শতাংশ রেললাইন ঝুঁকিপূর্ণ আর ৭০ শতাংশ মেয়াদোত্তীর্ণ ইঞ্জিন দিয়েই পরিবহন হচ্ছে যাত্রী।
রেলে বিনিয়োগ ছাড়িয়েছে অতীতের সব রেকর্ড। গত এক যুগে শুধু উন্নয়নেই খরচ হয়েছে প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকা। অথচ একটুও পরিবর্তন হয়নি যাত্রীদের পুরোনো সব অভিযোগ। বিপুল বিনিয়োগের পরও ট্রেনের গতি তো বাড়েইনি, উল্টো কমেছে অনেক রুটে। শিডিউল বিপর্যয়, আসন আর টিকিট সংকটের ভোগান্তি নিয়েই চলছেন যাত্রীরা।
তাদের অভিযোগ, যে পরিমাণ যাত্রী পরিবহনের ক্ষমতা দরকার, সেটা রেলের নেই। সিট সংকট আছেই। এ ছাড়া কয়টার ট্রেন কখন আসবে, কিছু বলতে পারি না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা প্ল্যাটফর্মে এসে বসে থাকতে হয়।
বিনিয়োগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের লোকসান। গত এক যুগে লোকসানের পাল্লা ছাড়িয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গত অর্থবছরে রেলের লোকসান ২ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
এখনও দেশের ৬০ শতাংশ রেললাইন ঝুঁকিপূর্ণ আর ৭০ শতাংশ মেয়াদোত্তীর্ণ ইঞ্জিন দিয়েই চলছে সেবা। চালকরা বলছেন, কোনো কোনো রুটে ট্রেনের গতি কমেছে আশঙ্কাজনক হারে।
তারা জানান, বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের সীমাবদ্ধতা আছে। ৩০ থেকে ৪০ বছর আগের ইঞ্জিনও চালাচ্ছেন। পুরাতন হওয়ার কারণে নানান সমস্যা লেগেই থাকে। এ ছাড়া পরিস্থিতি অনুযায়ী কোথাও গতিসীমা ৩০ আবার কোথাও ১০ করে চালাতে হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরিকল্পিত উন্নয়নের খেসারত দিচ্ছে রেল। অপরিকল্পিত উন্নয়নের ফলেই প্রতিবছর ভারী হচ্ছে রেলের লোকসানের পাল্লা। এ জন্য দরকার সুষম উন্নয়ন পরিকল্পনা।
এ বিষয়ে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. হাদীউজ্জামান সিটি নিউজ ঢাকাকে বলেন,
বিনিয়োগের যে প্রাধিকারের বিষয়টি আছে, সেটি কিন্তু রেল দিতে পারেনি। রেলের নীতিনির্ধারকরা চরম বিভ্রান্তির মধ্যে আছেন। কোনটি আগে করার কথা আর কোনটি পরে করার কথা, সেই বিষয়ে তারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। জনগণ যেখানে সেবা পাচ্ছে না, সেখানে ওই ঋণের বোঝাও জনগণকেই নিতে হচ্ছে।
তবে তা মানতে নারাজ রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। তিনি বলছেন, বিনিয়োগের সুফল পেতে অপেক্ষা করতে হবে আরও।
মন্ত্রীর কথায়, রেলের বিনিয়োগ এবং এটার সুফলটা তো এত দ্রুত পাওয়া সম্ভব নয়। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। এটা পাওয়া সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
বর্তমানে রেলের ৩৬টি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান, যার সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা।
সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
জেকেএস/