• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
গ্রেনেড হামলা

সেই নারকীয় হত্যার বিচার শেষ হবে কবে?

প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৩, ০৫:৪০ পিএম

সেই নারকীয় হত্যার বিচার শেষ হবে কবে?

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

হাইকোর্টে ৫ বছর ধরে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা। বেঞ্চের একজন বিচারপতি অসুস্থ থাকায় আটকে আছে শুনানি। তবুও রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের আশা, অক্টোবরেই শেষ হবে এ মামলার বিচারকাজ।

রক্তাক্ত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার ভিন্ন দিকে নিতে জজ মিয়া নাটক, আসামিদের উচ্চ আদালতে দৌড়ঝাঁপের কারণে বিচারিক আদালতে রায় পেতেই কেটে যায় ১৪ বছর। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবরে এসে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে করা দুই মামলার রায় হয়।

বিচারিক আদালতের রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে দেয়া হয় মৃত্যুদণ্ড। আর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে দেয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এ ছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয় আরও ১১ জনের।

পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, রাষ্ট্রীয় মদদে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করাই ছিল হামলার মূল উদ্দেশ্য।

তারেক ছাড়া পলাতক আসামিরা হলেন: সাবেক প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (যাবজ্জীবন), কুমিল্লার মুরাদনগরে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ (যাবজ্জীবন), অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার (২ বছর কারাদণ্ড), ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এ টি এম আমিন আহমদ (২ বছর কারাদণ্ড), হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফ (মৃত্যুদণ্ড), জঙ্গিনেতা মাওলানা তাজউদ্দিন (মৃত্যুদণ্ড), মহিবুল মুত্তাকিন (যাবজ্জীবন), আনিসুল মোরসালিন (যাবজ্জীবন), মোহাম্মদ খলিল (যাবজ্জীবন), মাওলানা লিটন (যাবজ্জীবন), জাহাঙ্গীর আলম বদর (মৃত্যুদণ্ড), মুফতি শফিকুর রহমান (যাবজ্জীবন), মুফতি আব্দুল হাই (যাবজ্জীবন) ও রাতুল আহমেদ বাবু (যাবজ্জীবন)।

বিচারিক আদালতের ধাপ পেরিয়ে আলোচিত এ মামলাটি এখন হাইকোর্টে নিষ্পত্তির অপেক্ষায়। একজন বিচারপতি অসুস্থ থাকায় মাঝপথে আটকে গেছে বিচারকাজ। অ্যাটর্নি জেনারেলের আশা, চলতি বছরের অক্টোবরের মধ্যেই নিষ্পত্তি হবে মামলাটি।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, তারাও চেষ্টা করছেন দ্রুত নিষ্পত্তি করার। চলছে পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টাও।

মন্ত্রী বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও হত্যা মামলার বিচার শেষ হবে। আসামিদের ফিরিয়ে আনার জোর চেষ্টা চলছে। এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

এই মামলার অন্যতম প্রধান আসামি জঙ্গি মুফতি আব্দুল হান্নানসহ ৩ জনের অন্য একটি মামলায় ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।

সেদিন কী ঘটেছিল
বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় আয়োজিত সমাবেশে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। হামলার পরপরই শেখ হাসিনাকে কর্ডন করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তার তৎকালীন বাসভবন ধানমন্ডির সুধা সদনে।

২১ আগস্টের রক্তাক্ত হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন ১৬ জন। পরে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ মোট ২৪ জন নেতাকর্মী প্রাণ হারান। রক্তাক্ত-বীভৎস ওই ভয়াল গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমান ছাড়াও সেদিন নিহত হন ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, হাসিনা মমতাজ রিনা, রিজিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), রতন শিকদার, মোহাম্মদ হানিফ ওরফে মুক্তিযোদ্ধা হানিফ, মোশতাক আহমেদ, লিটন মুনশি, আবদুল কুদ্দুছ পাটোয়ারী, বিল্লাল হোসেন, আব্বাছ উদ্দিন শিকদার, আতিক সরকার, মামুন মৃধা, নাসির উদ্দিন, আবুল কাসেম, আবুল কালাম আজাদ, আবদুর রহিম, আমিনুল ইসলাম, জাহেদ আলী, মোতালেব ও সুফিয়া বেগম। গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের সঙ্গে লড়াই করে ঢাকার মেয়র মোহাম্মদ হানিফসহ আরও কয়েকজন পরাজিত হন।

 

সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন

 

জেকেএস/

জাতীয় সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ